রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: শুভেন্দুর বিজেপি যোগের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়া। এর নেপথ্যে বিস্তর রাজনৈতিক কারণ আছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কারও যুক্তি, শুভেন্দুর দলবদলের পর অবিভক্ত মেদিনীপুরে দলের সংবিধানের রাশ যাতে হালকা না হয়, সেটা নিশ্চিত করতেই নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছেন মমতা। আবার বিজেপির দাবি, ভবানীপুর সেফ সিট নয়, টের পেয়েই নন্দীগ্রামে (Nandigram) লাফ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, খোদ শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী এর নেপথ্যে অন্য কারণ দেখছেন। তাঁর যুক্তি, রাজনৈতিক কারণের থেকেও মমতার এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে শুভেন্দুর প্রতি আক্রোশ। তিনি শুভেন্দুকে রাজনৈতিকভাবে শেষ করে দিতে চাইছেন।
শনিবার দুপুরে মোদির দূত হিসেবে কাঁথির অধিকারী বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। প্রায় আধ ঘণ্টা শান্তিকুঞ্জে ছিলেন তিনি। রীতিমতো পঞ্চব্যঞ্জনে লকেটকে মধ্যাহ্নভোজন করান শিশিরবাবু (Sishir Adhikari)। সেসময় দু’জনের কথোপকথনের একটি ক্লিপ এসেছে সংবাদমাধ্যমের হাতে। যাতে দেখা যাচ্ছে খেতে খেতেই লকেট মমতার প্রসঙ্গ টেনে শিশিরকে জিজ্ঞাসা করছেন, ‘‘উনি ডিশিসনটা নিলেন কেন নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর?’’ লকেটের প্রশ্ন শুনে একপ্রকার ক্ষিপ্তসুরে শিশিরবাবু জবাব দেন,‘‘শুভেন্দুকে (Suvendu Adhikari) শেষ করা! আমি (পড়ুন মমতা) বেঁচে থেকে ওকে শেষ করে দিতে চাই! ও আমার অভিষেককে শেষ করবে। আমি ওকে শেষ করে দিতে চাই।” এরপর অন্য শব্দের মাঝে শিশিরবাবুর কথা শোনা যায়নি। শেষে আবার তাঁকে বলতে শোনা যায়,” যেটা করেছে ওটা…ভয় দেখাচ্ছিল।…ভয় দেখাচ্ছিল। শুভেন্দু যাতে সরে পালিয়ে যায়…।”
অনেকে বলছেন শিশিরবাবুর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, মমতার নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে পারছেন না। শান্তিকুঞ্জ এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিজেদের পয়লা নম্বর শত্রু হিসেবে দেখেছে। অথচ, খাতায় কলমে শিশিরবাবু এখনও তৃণমূলের সাংসদ। ‘নাম কা ওয়াস্তে’ দলের একটি পদেও আছেন। তৃণমূলের পদে থেকেও যেভাবে তৃণমূলনেত্রীর বিরুদ্ধে চড়া সুর তাঁর মুখে শোনা গেল, তা এককথায় বিস্ফোরক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.