সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। সেখানে বিবাদ থাকেই। কিন্তু সৌজন্য পরিচয় দেয় ব্যক্তি স্বত্ত্বার। আর এই সৌজন্য দেখানোর ক্ষেত্রে এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যে আর পাঁচটা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের থেকে অনেকটাই আলাদা, সোমবার আরও একবার তা প্রমাণিত হল। শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) প্রতি বেনজির সৌজন্য দেখিয়ে ফের নন্দীগ্রামবাসীর মনজয় করলেন মমতা।
রাজনীতির ময়দানে তাঁরা একে অপরকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে নারাজ। ভোট রাজনীতির স্বার্থে প্রতি মুহূর্তে একে অপরের দিকে একের পর এক কটাক্ষ, তথা বাক্যবাণের গোলা ছোঁড়াছুড়ি চলছেই। মমতা শুভেন্দুকে আক্রমণ শানাচ্ছেন গদ্দার, মীরজাফর, বেইমান বলে। শুভেন্দু আবার পালটা মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করছেন, বেগম, রোহিঙ্গাদের ফুফা’র মতো বিদ্বেষমূলক বিশেষণে। কিন্তু এসবের মধ্যেও এই মুহূর্তে নিজের চরমতম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি মমতা যে সৌজন্য দেখালেন, তা বেনজির।
ঘটনাস্থল সেই বিরুলিয়া! ১০ মার্চ নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন এই বিরুলিয়াতেই ‘আক্রান্ত’ হতে হয়েছিল মমতাকে। সোমবার বিকেলে সেই বিরুলিয়া বাজারে ভোটপ্রচার করছিলেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো। সেসময় হঠাত সেখানে চলে আসে শুভেন্দুর কনভয়। দুটি কনভয় মুখোমুখি চলে আসার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়। ঠিক তখনই রাজনৈতিক সংঘাত ভুলে সৌজন্যের পরিচয় দেন মমতা। ইচ্ছে করলে তিনি শুভেন্দুর কনভয় টপকে আগে নিজের গন্তব্যে পৌঁছে যেতেই পারতেন। সেক্ষেত্রে বিজেপি (BJP) প্রার্থী হয়তো প্রচারের কাজে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়তেন। কিন্তু তেমনটা না করে মমতা নির্দেশ দেন শুভেন্দুর কনভয়কে আগে যেতে দেওয়ার। সেই মতো শুভেন্দুর কনভয়কেই আগে যেতে দেওয়া হয়। শুভেন্দুর কনভয় ঘটনাস্থল থেকে যাওয়ার পর নিজের গন্তব্যে যান মমতা।
আপাত দৃষ্টিতে এই ঘটনা স্বাভাবিক মনে হলেও, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মমতার এই সৌজন্য বেনজির বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, এই মুহূর্তে মমতা-শুভেন্দু একে অপরের চরমতম প্রতিপক্ষ। নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের ভোটের ফলাফলের উপরই নির্ভর করছে দুই নেতার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। তাছাড়া প্রতি মুহূর্তে শুভেন্দু যে ভাষায় মমতাকে আক্রমণ করছেন, সেটাও খুব শোভনীয় নয়। এই পরিস্থিতিতে এই সামান্য সৌজন্য দেখানোটাও যে মহানুভবতার নজির, সেটা বলাই বাহুল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.