প্রতীকী ছবি।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: আধার কার্ড নেই! কেন্দ্রের নিয়মের গেরোয় সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত প্রতিবন্ধী পরিবার৷ আধার বিনা আঁধারে প্রায় অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন নলহাটির হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা৷ একে তো অভাব, তার উপরে পরিবারের রয়েছে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন দুই সদস্য৷ বেশ কয়েকবার নাম তোলার উদ্যোগ নেওয়া হলেও প্রযুক্তিগত কারণে তালিকা থেকে বাদ পড়েছে পরিবারটির নাম৷ শত চেষ্টার পরও আধার কার্ড না মেলায় চূড়ান্ত বিপাকে দুঃস্থ পরিবার৷
নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের ভদ্রপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণপাড়ায় বসবাস মার্জিত পরিবারের৷ মেয়ে বছর ২০-র বিশাখা মার্জিত৷ বিশাখা ৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধী৷ পুষ্টির অভাব শরীরের স্পষ্ট৷ স্থানীয় মহারাজ নন্দকুমার উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে বিশাখা৷ কিন্তু শারীরিক ও আর্থিক কারণে বেশিদূর আর পড়া এগতে পারেনি৷ স্কুলে পড়তে পড়তেই হাড় বেঁকে যেতে শুরু করে৷ চিকিৎসকদের কোথায় অর্থ আর্থ্রাইটিসের জেরে চলা ফেরায় অসুবিধা বোধ করে৷ মাথারও সমস্যা তৈরি হয়৷ ফলে ১৫ বছর বয়স থেকে বিছানাকে সঙ্গী করেছে বিশাখা৷ তাঁর চিকিৎসার জন্য মাসে হাজার তিনেক খরচ হয় পরিবারের৷ এর সঙ্গে বিশাখার দাদা অনন্ত মার্জিত চল্লিশ শতাংশ প্রতিবন্ধী৷ তাঁরও পায়ের সমস্যা রয়েছে৷ তবুও বোনের চিকিৎসা খরচ জোগাড় করতে ঠেলা ট্রলিতে বাদাম বিক্রি করে যৎসামান্য আয় করেন। বাবা অদ্বৈত মার্জিতের দুটো কিডনিই খারাপ।
[গণপতি বন্দনায় শান্তিনিকেতন, উৎসবের আমেজে মেতেছে রতনপল্লি]
ফলে, বেশ কয়েক বছর ধরে তিনিও গৃহবন্দি৷ মা নমিতা মার্জিত এলাকায় পরিচারিকার কাজ করেন৷ মায়ে-পোয়ের উপার্জনে চলে, চার জনের সংসার৷ কিন্তু, পরিবারের আধার কার্ড না থাকায় কোনও সরকারি সুবিধা পাচ্ছে না অসহায় পরিবারটি৷ অনন্ত মার্জিত আধার কার্ডের জন্য দু’দুবার পঞ্চায়েত গিয়েছেন৷ কিন্তু, হয়নি৷ মাধ্যমিক পাশ অনন্ত মার্জিত শুনেছেন আঙুলের ছবি না হলে, চোখের মণিতে আধার হয়। শুনেছেন অনলাইনে আবেদন করা যায়৷ কিন্তু, নিয়ম থাকলেও সহযোগিতার অভাবে এখনও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত গোটা পরিবার৷ নলহাটির বিডিও রাজদীপ শঙ্কর গৌতম গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন৷
[দুর্গাপুজোর চাঁদার টাকা আত্মসাৎ! প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.