অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া সদর: স্কুলের মাঠেই বাঁধা হয়েছে প্যান্ডেল৷ গেটে লেখা শুভ বিবাহ৷ স্কুলের ভিতরেই চলছে রান্নাবান্নার তোড়জোড়৷ নববধূকে বসানোর জায়গাও মোটামুটি সুসজ্জিত৷ সোমবার সকাল থেকে সাজো সাজো রব হাওড়া ময়দানের অক্ষয় শিক্ষায়তনে৷ অবাক হচ্ছেন, ভাবছেন সরকারি স্কুলে পড়াশোনার পরিবর্তে বিয়েবাড়ির আয়োজন আবার কীভাবে সম্ভব? এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনি ভেবে ফেলেছেন যে ভুল পড়ছেন, তাই তো? মোটেও না, যা পড়ছেন তাই সত্যি৷ সরকারি স্কুলেই ঘটা করে আয়োজন করা হল অশিক্ষক কর্মীর ছেলের বউভাত৷
অক্ষয় শিক্ষায়তনে ১৯৮৯ সাল থেকেই অশিক্ষক কর্মচারী হিসাবে কাজ করছেন গৌতম দাস৷ তিনি হালিশহরের বাসিন্দা৷ রাতপাহারার কাজ করায় স্কুলেই থাকতেন তিনি৷ বেশ কয়েকবার ওপেন হার্ট সার্জারিও হয়েছে গৌতমের৷ সোমবার রাতে তাঁর ছেলে কুন্তলের বউভাত৷ আর এই অনুষ্ঠানটি ওই স্কুলেই আয়োজন করেছিলেন তিনি৷ সকাল থেকেই স্কুলের মাঠে প্যান্ডেল বাঁধা হয়ে যায়৷ স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের একটি ঘরে রান্নাবান্নার আয়োজন করা হয়৷ বেলা বাড়তেই এহেন প্রস্তুতি নজরে আসে স্থানীয়দের৷ অবাক হয়ে যান সকলে৷ সরকারি স্কুলে বিয়েবাড়ির আয়োজনে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়৷
পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের আপাতত ছুটি৷ তবে একাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন চলছে৷ অনুষ্ঠানের আয়োজনে পড়ুয়াদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে বলেই দাবি অভিভাবকদের একাংশের৷ প্রধান শিক্ষকের কাছেও এ বিষয়ে আপত্তি জানান অনেকেই৷ অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা আগে থেকেই জানা ছিল প্রধান শিক্ষক বেদান্তবিহারী পোদ্দারের৷ তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে ওই অশিক্ষক কর্মচারীর৷ তাঁর শারীরিক অবস্থাও মোটেই ভাল নয়৷ মানবিক স্বার্থেই স্কুলে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷’’ এই অনুষ্ঠানের জেরে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান প্রধানশিক্ষক৷
স্কুলে বিয়েবাড়ির আয়োজনের কথা কানে পৌঁছায় ডিআই শান্তনু কুমার সিনহারও৷ তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আগে কিছুই জানতাম না৷ এবার ঘটনাটি খতিয়ে দেখব৷’’ অভিযোগ পেয়ে ওই স্কুলে যান পুলিশ আধিকারিকরা৷ অশিক্ষক কর্মচারী ও প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছেন তাঁরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.