শেখর চন্দ্র, আসানসোল: আসানসোল (Asansol) লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের আগে আসানসোলে বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলল। কুলটি, হীরাপুর, ডিসেরগড়ের পর এবার বারাবনি বিধানসভার সালানপুর। বৃহস্পতিবার এই বেআইনি অস্ত্র (Arms) কারখানার হদিশ মিলে। সালানপুর থানার রূপনারায়ণপুর পুলিশ ফাঁড়ির অন্তর্গত চিতলডাঙার উপরপাড়া এলাকায়। পুলিশ কারখানা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে এদিন সন্ধ্যায় জানান আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মোদি। ধৃতদের নাম রাজকুমার চৌধুরী, প্রবীণ কুমার ও মহম্মদ ইকবাল। তাদের বাড়ি বিহারের মুঙ্গের জেলার কোতোয়ালি থানার হাজি সুবন গ্রামে। কারখানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১২ টি অসম্পূর্ণ আগ্নেয়াস্ত্র, লেদ মেশিন-সহ অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ও কাঁচামাল। আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে চিত্তরঞ্জনের বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার কর্মী বাড়ির মালিক দীনেশ চৌধুরীকে। ধৃতদের শুক্রবার আসানসোল আদালতে তোলা হবে। তিনজনকেই হেফাজতে নিতে আদালতে পুলিশ আবেদন করবে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ যখন এদিন দুপুরে সেখানে হানা দেয়, তখন ধৃতরা কারখানার ভেতরে অস্ত্র তৈরি করছিল। পুলিশ জানতে পারে, সালানপুর থানার রূপনারায়ণপুরের চিতলডাঙার উপর পাড়ায় রেল কর্মী দীনেশ চৌধুরী বড় লোহার গেট লাগানো বাড়ি ভাড়া নিয়েছে ভিন রাজ্যের লোকজন। সেখানে নাকি বেআইনি অস্ত্র তৈরি হচ্ছে। এদিন দুপুরে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেই বাড়িটি থেকে অস্ত্র তৈরির লেদ মেশিন অন্যান্য যন্ত্রাংশ উদ্ধার করে। একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার হয় ওই বাড়িটি থেকে। স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, এই বাড়ির মালিক চিত্তরঞ্জনে থাকে। তার কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাড়িটি মাঝেমধ্যেই বন্ধ পাওয়া যেত। গত কয়েকদিন ধরে বাড়িটি খোলা হয়েছিল।
এই প্রসঙ্গে ডিসিপি (পশ্চিম) আরও বলেন, বেশ কয়েক মাস আগে মুঙ্গেরের (Munger) বাসিন্দা রাজকুমার চৌধুরী রেল কর্মী দীনেশ চৌধুরীর কাছ থেকে এই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। সে এখানে পরে লেদ মেশিন-সহ অন্য যন্ত্রাংশ আনে। সেই অস্ত্র তৈরির জন্য কাঁচামাল নিয়ে আসতো। প্রবীণ কুমার ও মহম্মদ ইকবালের মতো কারিগর মুঙ্গের থেকে এই কারখানায় এনে অস্ত্র তৈরি করত। পরে সেই অস্ত্র বিহারের বাসিন্দা নবীন কুমারকে দিত বিক্রি করার জন্য। এখনও পর্যন্ত কতগুলো আগ্নেয়াস্ত্র এই কারখানায় তৈরী হয়ে বিক্রির জন্য গেছে, তা ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, বাড়ির মালিকের সঙ্গে এই কারখানার কোন সম্পর্ক আছে কিনা, তা জানার জন্য তাকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে।
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরা জানতেন এই বাড়িতে নাটবল্টু তৈরি হত। কিন্তু এদিন পুলিশ আসতেই এলাকাবাসীরা হতবাক হয়ে যান। তাঁরা জানতে পারেন ওই বাড়িতে বেআইনি অস্ত্র বানানো হচ্ছিল। আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের (Loksabha By-Election) আগেই অস্ত্র তৈরির কারখানার হদিশ পাওয়া এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এরকম একটি কারখানার হদিশ মেলায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.