শেখর চন্দ্র, আসানসোল: তবে কি মন্ত্রিত্ব হারানোটাই মেনে নিতে পারলেন না? নাকি রাজ্য সভাপতির সঙ্গে মতান্তরের জেরে দলে নিজের অবস্থান নিয়ে বেড়ে চলা অস্বস্তিই হয়ে উঠল অন্তরায়? শনিবার বারবেলার কিছু পরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা এলাকার সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র (Babul Supriyo) সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘চললাম, আলবিদা’ পোস্ট ঘিরে এমন একাধিক জল্পনায় এখন আসানসোলের রাজনৈতিক মহল সরগরম।
কিন্তু কী এমন ঘটল, যার জন্য একেবারে সরাসরি ইস্তফার পথে সাংসদ, তা এখনও স্পষ্ট নয় জেলা বিজেপির অন্দরেও। আর উত্তরটা যাঁর জানা, ফোনে বা হোয়াটসঅ্যাপে বরাবর ‘কাছের মানুষ’ সেই সাংসদ বাবুল এদিন সারাদিনই থাকলেন অধরা। ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপেও থেকেছেন নীরব। আসানসোলের সাংসদ পদ যে তিনি ছাড়তে চলেছেন, এদিনের পোস্টেই তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন বাবুল। দু’দুবারের সাংসদের এহেন আচমকা ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাস’ নিয়ে আসানসোলের বিজেপি শিবির আপাত ‘স্পিকটি নট’। তবে বিরোধী শিবিরে থাকাকালীন বাবুলের সঙ্গে যাঁর দ্বৈরথ ছিল রোজনামচা, এখন বিজেপিতেই শামিল সেই জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari) অবশ্য মুখ খুলেছেন।
তাঁর কথায়, “উনি আসানসোলের (Asansol) সাংসদ। আমরা চাইব উনি দলেরও থাকুন, সংসদেও থাকুন। ওঁর কাছ থেকে আসানসোলবাসী আরও অনেক কিছু পাবেন। উনি চলে গেলে আসানসোলের ক্ষতি ও দলেরও ক্ষতি।” আসানসোলের বিজেপি নেতৃত্ব বাবুলের এই পোস্ট নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বিজেপির জেলা আহ্বায়ক শিবরাম বর্মনের ফোন সুইচড অফ ছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাশু বলেন, “এটা অন্য দলের ব্যাপার। তিনি যে দলের, তারা বিষয়টা ভালো বুঝবে ও বলতে পারবে।” রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ ও জেলা সিপিএমের নেতা বংশগোপাল চৌধুরী ‘অন্য দলের ব্যাপার’ বলে তেমন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। গত বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় দলের ভরাডুবি হওয়ার পরে দলে বাবুল আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের পরে ২০১৯ সালে আসানসোল থেকে বাবুলের জয়ের ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। তিনি আবার দ্বিতীয়বারের জন্য মন্ত্রী হন। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে কলকাতার টালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে বিজেপি বাবুলকে অরূপ বিশ্বাসের বিপক্ষে প্রার্থী করেছিল। কিন্তু তিনি হেরে যান। তারপর থেকেই দলে তাঁর অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। বাবুলের আগামী পদক্ষেপের দিকেই এখন অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আসানসোলের মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.