নন্দন দত্ত, বীরভূম: রাত পোহালেই পঞ্চায়েত ভোট। অথচ এলাকায় রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দেখা নেই। প্রার্থীরাও অনেকেই জেলে। তাই ভোট নিয়ে কোনও উৎসাহই নেই বীরভূমের সাঁইথিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের ৬টি অঞ্চলে। সন্ধে নামলেই ঘরে ঢুকে পড়ছেন মহিলারা। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা ঘরছাড়া। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা বলছেন, এবারের পঞ্চায়েত ভোট হবে প্রতিবাদের ভোট। কিন্তু, কীসের প্রতিবাদ? কেনই বা তাঁরা প্রতিবাদ করছেন? মুখে কুলুপ গ্রামবাসীদের।
[রাজ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হতে দেবে না তৃণমূল, অভিযোগ বাবুলের]
জানা গিয়েছে, গত ৭ এপ্রিল মহম্মদবাজার ব্লকের ওই ৬ অঞ্চলের বিরোধী প্রার্থীরা মনোনয়ন দিয়েছিলেন। কিন্তু, মনোনয়ন জমা দেওয়ার ইস্তক এলাকায় পুলিশি সন্ত্রাস চলছে বলে অভিযোগ। শোনা যাচ্ছে, ওই ৬টি অঞ্চলের ১০ হাজার বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। সকলেই অবশ্য জামিন পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, বিরোধী দলের ১৮৬ কর্মীর বিরুদ্ধে সাতটি ধারায় শাসকদল ফের মামলা দায়ের করে বলে অভিযোগ। ১২২ জন জামিন পেলেও, এখনও ছাড়া পাননি বহু প্রার্থীই। শুক্রবার আবার সিউড়ি থেকে ফেরার পথে স্থানীয় বিজেপি নেতা নেপাল গড়াইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁকে ১৪ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
[বিজেপি প্রার্থীর শ্বশুরকে তুলে নিয়ে গিয়ে গলা কেটে খুন, এলাকায় চাঞ্চল্য]
কিন্তু, কেন এই ধরপাকড়? বিজেপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগটা ঠিক কী? শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এলাকায় অস্ত্র হাতে সন্ত্রাস তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। শুক্রবার সিউড়ি দলের জেলা দপ্তর থেকে টাকা নিয়ে অস্ত্র কিনতে যাচ্ছিলেন ধৃত বিজেপি নেতা নেপাল গড়াই। যথারীতি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি বীরভূম জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ মণ্ডল। তাঁর দাবি, অস্ত্র কিনতে নয়, জেলা কার্যালয় থেকে ভোট পরিচালনার টাকা নিয়ে গ্রাম ফিরছিলেন ওই বিজেপি কর্মী। দলের জেলা সভাপতির অভিযোগ, বিজেপির যেসব কর্মীরা জামিন পেয়েছেন, তাঁদের শাসকদলের হয়ে কাজ করার প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন বিধায়ক ও মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। চাপ দিচ্ছে পুলিশও। এই অভিযোগ নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক। এদিকে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বিজেপি নেতা-কর্মীদের ধরপাকড়ের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে মহম্মদবাজারের ৬টি অঞ্চলে। সবকটি অঞ্চলই সাঁইথিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। কয়েকটি গ্রাম বিচ্ছিন্নভাবে ভোটের প্রচার চলছে ঠিকই। দেওয়াল লিখনও যে একেবারেই নেই, এমনটাও নয়। কিন্তু, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে তেমন হেলদোল নেই গ্রামবাসীদের। তাঁদের একটাই কথা, যদি ভোট দিতে পারি, তাহলে ভোট হবে প্রতিবাদের।
ছবি: বাসুদেব ঘোষ
[লাল গোলাপ হাতে দরজায় হাজির প্রার্থী! অবাক বাঁকুড়ার সিমলাপালের বাসিন্দারা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.