সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পা অনেকটা সেরে গিয়েছে।’ অবশেষে স্বস্তির খবর শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার জলপাইগুড়ির সভা থেকে তৃণমূলনেত্রী জানিয়ে দিলেন, তাঁর আঘাত লাগা পায়ে যন্ত্রণা এখন অনেকটাই কম। ইঙ্গিত দিলেন, খুব শীঘ্রই পুরোদস্তুর সুস্থা হয়ে উঠবেন তিনি। মমতার কথায়, ‘আর সামান্য সমস্যা আছে, আগামী কয়েকদিনে পুরোপুরি সেরে যাবে।’ মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া এই সংবাদ তাঁর অগণিত অনুগামীকে স্বস্তি দেবে, তাতে সন্দেহ নেই। প্রসঙ্গত, গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে মনোনয়ন দিতে গিয়ে আহত হন তৃণমূলনেত্রী। তাঁর বাঁ পায়ের গোড়ালিতে চিড় ধরে। দু’দিন হাসপাতালে ভরতিও থাকতে হয় তাঁকে। তারপর থেকে পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থাতেই রাজ্যজুড়ে প্রচার চালাচ্ছেন মমতা।
বুধবার জলপাইগুড়ির ধুপগুড়িতে সভা ছিল তৃণমূলনেত্রীর। জলপাইগুড়ির রাজনীতি অনেকটা নিয়ন্ত্রিত হয় রাজবংশী ভোটারদের সমর্থনের উপর। স্বাভাবিকভাবেই এদিন তৃণমূল নেত্রীর ভাষণে বারবার উঠে এল রাজবংশী প্রসঙ্গ। শীতলকুচির প্রসঙ্গ টেনে বললেন, “যারা গুলি করে মেরেছে, তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন হবে। অন্যায় যদি রাজবংশীর সঙ্গে হয়, আমি দাঁড়াব পাশে। অন্যায় যদি সংখ্যালঘুদের সঙ্গে হয়, আমি দাঁড়াব পাশে, অন্যায় যদি যুবসমাজের সঙ্গে হয়, আমি দেখব। এটা গণহত্যা। কখনও হয় না এমন। যারা এটা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আমি ছেড়ে কথা বলব না।” মুখ্যমন্ত্রী এদিন মনে করিয়ে দেন, রাজবংশী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের জন্য তাঁর সরকার যা করেছে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তার কিছুই করেনি। ধুপগুড়ির সভায় মমতা বলেন, “ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে দিয়েছি। সংগ্রহশালা তৈরি করেছি। তাঁর জন্মদিনে ছুটির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। রাজবংশী উন্নয়ন বোর্ড তৈরি করেছি। কামতাপুরী উন্নয়ন বোর্ডও তৈরি করে দিয়েছি। রাজবংশীদের জন্য করেছি, মতুয়াদের জন্য করেছি, কামতাপুরীর জন্য করেছি।”
উত্তরবঙ্গের এই উদ্বাস্তু সম্প্রদায়গুলির মধ্যে এনআরসি নিয়ে একটা আশঙ্কা কাজ করছে। ভোটের আগে সেই আশঙ্কা কাজে লাগাতে চাইছেন মমতা। ধুপগুড়িতে দাঁড়িয়ে তাঁর সাফ ঘোষণা, “বাংলায় কোনও এনআরসি, এনপিআর, CAA করতে দেব না। সব উদ্বাস্তুরা এদেশের নাগরিক।” ঘটনাচক্রে একদিন আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দার্জিলিংয়ে গিয়ে ঘোষণা করেছেন, এখনই এনআরসি করার কোনও পরিকল্পনা কেন্দ্রের নেই। শাহর সেই কথা যে বিশ্বাসযোগ্য নয়, সেটাও বোঝানোর চেষ্টা করেছেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “আমি অমিত শাহ নই, দার্জিলিংয়ে এক কথা, জলপাইগুড়িতে এক কথা আর বনগাঁয় আরেক এক কথা বলব। আমি যা বলি, সেটাই করি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.