নন্দন দত্ত, সিউড়ি: লগ্নভ্রষ্ট তাঁতিপাড়া! রাজনগর ব্লকের বাকি চারটি পঞ্চায়েতে নির্বাচন হলেও এবার ভোট হবে না তাঁতিপাড়ায়৷ দেওয়ালে দেওয়ালে বিরোধী প্রার্থীদের হয়ে প্রচার, ভোটের প্রার্থনা থাকলেও ফাঁকা ভোটের ময়দান৷ কারণ, ভোটের শেষ মুহূর্তে শনিবার তাঁতিপাড়া পঞ্চায়েত আসনের ১১টিতেই বিনা লড়াইয়ে জয়ী হয়েছে তৃণমূল৷ অথচ এমন হওয়ার কথা ছিল না৷ রাজনগর ব্লকের তাঁতিপাড়া থেকেই বিজেপির সংগঠন শুরু হয়েছিল৷ নির্বাচন পর্বে তাদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো৷ কিন্তু, শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় তাঁতিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত আজ যেন ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত৷ অত আয়োজনের পরও যেন বিয়ের আসরে বর হাজির না হওয়ার মতো অবস্থা৷
[মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় বিজেপি প্রার্থীর অন্তঃসত্ত্বা জাকে ধর্ষণের অভিযোগ]
বীরভূমের ৪২টি জেলা পরিষদ আসনের একমাত্র তাঁতিপাড়া ৫ নম্বরে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে চিত্রলেখা রায় মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন৷ কিন্তু ভোটের শেষলগ্নে দাঁড়িয়ে নাম প্রত্যাহার করেন৷ এদিকে চিত্রলেখা রায়ের নাম প্রত্যাহারের পরও সেই নাম দেওয়াল লিখন মুছে বিজেপির হয়ে প্রচারে নেমেছিল বিজেপির অঞ্চল প্রমুখ ধনঞ্জয় দাসরা৷ কিন্তু দ্বিতীয় বাঁধ ভাঙল তৃণমূলের বিদায়ী জেলা পরিষদ সদস্য বিজেপির প্রার্থী অনুপ গড়াই নাম প্রত্যাহার করে নিতেই৷ চিত্রলেখা তৃণমূলে ফিরে যেতেই অনুপবাবুও অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করেন৷ সে খবর বিজেপির কাছেও ছিল৷ তাই দ্বিতীয় দফার মনোনয়নে ১১টি আসনে ১৪ জনকে প্রার্থী করেছিলে বিজেপি৷ অনুপের বিরুদ্ধে দলীয় প্রার্থী গোঁজ হিসাবে দাঁড় করানো হয়েছিল ধনঞ্জয় দাসকে৷ কিন্তু ঝড়ের মুখে দু’দিন টিকতে পারলেও শনিবার শেষ মুহূর্তে ভেঙে গেল প্রার্থীদের মনোবল৷ সিপিএম, বিজেপির সব প্রার্থী নাম প্রত্যাহারে বাধ্য হলেন বলেই মত স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীর৷
বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, একদিকে সশস্ত্র ভাড়াটে গুন্ডা, অন্যদিকে পুলিশ৷ তাই শেষ মুহূর্তে নাম প্রত্যাহার৷ এদিকে তাঁতিপাড়া ঘুরলে এখনও জ্বলজ্বল করছে বিরোধী দলের দেওয়াল লিখন৷ আশা নিয়ে, রাত জেগে পালটা দিতে ময়দানে নেমেছিল বিরোধীরা৷ তবে নাম প্রত্যাহার করে নিলেও তারা ময়দান ছাড়ছেন না, দাবি বিরোধীদের৷ অনুপ গড়াই বলেন, ‘‘আবার সুস্থ রাজনীতির চল এলে তখন রাজনীতি করব কিনা ভাবব৷’’ স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি সুকুমার সাধু বলেন, ‘‘মনোনয়ন পর্ব থেকে প্রত্যাহার পর্যন্ত রাজনগরে বাধা দেওয়ার ইতিহাস নেই৷ সংগঠনহীন একটি দল উন্নয়ন বিরোধী প্রচারে বেড়িয়ে নিজেদের লজ্জায় নাম প্রত্যাহার করেছে৷ নিজেদের বিরুদ্ধে নিজেরাই গোঁজ দিয়েছে৷ এটা ওদের দলের লড়াই৷ আমাদের লড়াই উন্নয়নের সঙ্গে৷ তাই ওরা লগ্নভ্রষ্ট শুধু নয়, চিরকাল অবিবাহিতই থাকবে৷’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.