নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পঞ্চায়েত নির্বাচন কবে হবে? তা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি৷ ভোটের দিনক্ষণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত না হলেও বিনা লড়াইয়ে বীরভূমের জেলা পরিষদের জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরা মহকুমা শাসকের দফতর থেকে জয়ের শংসাপত্র গ্রহণ করলেন৷ বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৃণমূলের এটা চাপ বাড়ানোর কৌশল বলে দাবি করেছে বিরোধীরা। যদিও বিদায়ী সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরি বলেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে সারা জেলায় কোনও বিরোধী প্রার্থী নেই৷ স্বভাবতই আমরা জয়ী হয়ে তার শংসাপত্র নিয়েছি। এতে আপত্তির কিছু নেই৷’’
বিনা লড়াইয়ে জয় এসেছে বীরভূম জেলা পরিষদের সব আসনে৷ ৪২টি আসনেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। যাদের মধ্যে ৩০ জন নতুন প্রার্থী আছেন। যে তালিকায় ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো গত ৩৫ বছর পঞ্চায়েত রাজনীতিতে যুক্ত ব্যক্তি আছেন। আবার রাজারাম ঘোষের মতো মহম্মদবাজার থেকে সমিতির প্রাক্তন সভাপতিও আছেন। আবার প্রদীপ ভকত, অরুণ সাহা, শেখ করিমের মত বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষরা আছেন। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই এভাবে শংসাপত্র গ্রহণ করে পালটা চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে শাসকদল। বুধবার রামপুরহাটে মহকুমা শাসক সুপ্রিয় দাস শংসাপত্র তুলে দেন। বৃহস্পতিবার সিউড়িতে সদর মহকুমা শাসক কৌশিক সিনহা বিদায়ী সভাধিপতির হাতে শংসাপত্র তুলে দেন।
জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, আইনগত দিক থেকেই এই শংসাপত্রগুলি তুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও নির্বাচিত প্রার্থীদের অনেকেরই ইচ্ছে ছিল গত পাঁচ বছরে এলাকায় যা উন্নয়ন হয়েছে তার নিরিখে ভোটে জিতে আসতে। কিন্তু প্রথম দফা মনোনয়নের মত দ্বিতীয় দফাতেও বিরোধীরা নিজেদের মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ। কিন্তু বিরোধীশূন্য জেলা পরিষদের বদনাম ঘোচাতে শাসকদলের পক্ষ থেকেই বিরোধীদের নাম করে ভূতুড়ে প্রার্থী দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে৷ যার ফলে শেষ পর্যন্ত জেলা পরিষদে প্রার্থী সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৭ জন৷ কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ভূতুড়েরা প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নিলে ৪২ জনই বিনা লড়াইয়ে জয়ী হয়৷ তবে, শংসাপত্র নিয়ে নিজের পুরনো দপ্তরে বিজয়ীদের নিয়ে যান সভাধিপতি।
বিকাশ রায়চৌধুরি জানান, তাঁদের এই বিজয় আগামী নির্বাচনে জেলার যেখানে নির্বাচন হচ্ছে সেখানে বাড়তি সুবিধা দেবে৷ তিনি নিজে দলের পক্ষ থেকে রাজনগরের দায়িত্বে৷ তারসঙ্গে মহম্মদবাজার, ময়ূরেশ্বরের দলীয় প্রার্থীদের জয়ী করতে প্রচারে যাবেন৷ তাঁর দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল যে নির্দেশ দিয়েছেন, সে পথেই জেলা আজ ‘সোনার বীরভূমে’ পরিণত হয়েছে। দল তাঁকে আগামিদিনে সভাধিপতি করলে সবাইকে নিয়ে তিনি উন্নয়নের ধারা বজায় রাখবেন। নচেৎ নতুন সভাধিপতিকে একইভাবে সহযোগিতা করবেন।
ছবি বাসুদেব ঘোষ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.