স্টাফ রিপোর্টার: ই-মনোনয়ন জমা দিয়ে ভোটে জেতা ভাঙড়ের পাঁচ নির্দল প্রার্থী আর পঞ্চায়েত সদস্য নন। না কি ভোটে জিতে সার্টিফিকেট হাতে পাওয়া, বিজ্ঞপ্তি জারি এবং প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাঁদের সদস্যপদ থেকে যাবে? সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বাংলার পঞ্চায়েত নিয়ে রায় দিতে গিয়ে ‘ই-মনোনয়ন বৈধ নয়’ বলার পরই ভাঙড় তথা রাজ্যজুড়ে ওই নির্দল জয়ীদের সদস্যপদ নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।
রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় শুক্রবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন,“ই-মনোনয়নে জেতা প্রার্থীদের সদস্যপদ বাতিল হবে কি না তা জানতে আইন দপ্তরের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।” ভাঙড়ের পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েত এলাকায় হোয়াটসঅ্যাপে আটজন নির্দল মনোনয়ন জমা দিয়ে ভোটে লড়েন। কলকাতা হাই কোর্ট এই আটজনের মনোনয়ন বৈধ বলে রায় দেয়। এর মধ্যে পাঁচজন ভোটে লড়াই করে জয়ী হন। জয়ের সার্টিফিকেট পাওয়ার পর ইতিমধ্যে সদস্য হিসাবে প্রশিক্ষণও নিয়ে এসেছেন। কিন্তু মাছিভাঙার সেই ইস্রাফিল মোল্লা, খামারাইটের আজিজুল মোল্লা, টোনার সালেহারা বিবি, পদ্মপুকুর গ্রামের ফরিদউদ্দিন মোল্লা এবং গাজীপুরের জাহানারা বিবিদের পঞ্চায়েতের সদস্যপদের ভবিষ্যৎ খুবই অনিশ্চিত। শীর্ষ আদালতের রায়ের সরল ব্যাখ্যায়, সদস্যপদ বাতিল। কিন্তু নির্দলদের তরফে ভাঙড়ের বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে আন্দোলনকারীদের সাধারণ সম্পাদক মির্জা হাসান পাল্টা দাবি করেছেন, “সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু বলেছে, নতুন করে ভোট হবে না। তাই পাঁচজনের সদস্যপদ বাতিল হচ্ছে না। সংবিধান মেনে নির্দলরা জয়ের সার্টিফিকেট পেয়েছেন, গেজেট হয়েছে, প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাই সদস্যপদ থাকছে।” পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার যে সময়সীমা রাজ্য নির্বাচন কমিশন তখন দিয়েছিল সেই সময়ের মধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপে এই নির্দলরা প্রার্থীপদ পাঠিয়েছিল বলে দাবি মির্জার।
রাজ্য সরকারি আইনজীবীদের ব্যাখ্যা, ভোটে জেতা বা হারা দূরের কথা, আগে তো কমিশনের কাছে মনোনয়ন জমা দিয়ে প্রার্থীপদ। হাই কোর্ট ই-মনোনয়ন বৈধ বলেছিল, কিন্তু এখন তো সুপ্রিম কোর্ট বলেছে ওই মনোনয়ন অর্থাৎ প্রার্থীপদই অবৈধ। তা হলে কী থাকবে পাঁচ নির্দলের সদস্যপদ? পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েতের অন্য জয়ী সদস্যরা অবশ্য দাবি করেছেন, নির্দলদের সদস্যপদ বাতিল করে দিয়ে অবিলম্বে ভোট করা হোক। বস্তুত এই কারণে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এদিন ফের পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েতের ৮৩, ৮৪, ৮৫, ৯১ ও ৯২ বুথে ফের ভোটের জল্পনা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, দেশের শীর্ষ আদালত যাঁদের মনোনয়নই অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে স্বাভাবিক নিয়মে তাঁদের প্রার্থীপদ বাতিল হয়ে যাওয়ায় কথা। যদি প্রার্থী না থাকে তবে সেই ভোটের ফলেরও আর মূল্য নেই। অবশ্য প্রকাশ্যে কোনও জেলা তৃণমূল নেতা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। কারণ, যেহেতু ওই পাঁচ সদস্য ভাঙড়ের বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। এবং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নবান্নর প্রত্যক্ষ তদারকিতে ভাঙড়-জট কেটেছে, এলাকায় ফিরেছে শান্তি। তাই সুপ্রিম কোর্ট ই-মনোনয়ন বাতিল করে দিলেও প্রকাশ্যে কেউ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
[বাড়ির নিচে গুপ্তধনের সন্ধানে নেমে এ কী হাল হল গৃহকর্তার!]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.