নন্দন দত্ত, সিউড়িঃ পঞ্চায়েত নির্বাচন কবে হবে? পিছোবে কি? এ প্রশ্ন গোটা রাজ্য জুড়েই। তবে তার থেকে বেশি চিন্তায় বিরোধীরা। তাঁদের প্রার্থীদের কীভাবে নির্বাচন পর্যন্ত ধরে রাখবেন এই ভাবনাতেই কালঘাম ছুটছে বিরোধী নেতৃত্বের। কারণ ইতিমধ্যে বিরোধী প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রক্রিয়া চালু থাকা পর্যন্ত নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। পাশাপাশি অনেক প্রার্থী ইতিমধ্যে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাম প্রত্যাহার করতে চাইছেন। তাই নিজেদের প্রার্থী ধরে রাখতে বিরোধীরা নিজেদের মতো পদ্ধতি অবলম্বন করেছে।
[ ‘জুতোপেটা করে তাড়িয়ে দেব’, মেজাজ হারিয়ে দলীয় কর্মীদেরই হুমকি দিলীপের ]
নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আইনি জটিলতা চলছে। কবে নির্বাচন হবে সে নিয়ে দলীয় স্তরে যেমন আলোচনা চলছে, তেমনই মনোনয়ন দেওয়ার পর প্রার্থীদের কীভাবে নির্বাচন পর্যন্ত ধরে রাখা যাবে তা নিয়েও চিন্তার শেষ নেই। কারণ বীরভূমে তাঁতিপাড়া ৫ নম্বর আসনে জেলা পরিষদের বিজেপি প্রার্থী চিত্রলেখা রায় নাম প্রত্যাহারের পরপরই, তাঁর পুরনো দল তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, তৃণমুল থেকে বিজেপি আসা এমনই বেশ কিছু প্রার্থী ফের তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তৃণমূলের তরফে সে কথা স্বীকার করা হয়েছে। যদিও বিজেপির তরফে জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় জানান, “তৃণমূলের পক্ষ থেকে হুমকি থেকে প্রলোভন সব দেখানো হচ্ছে। কিন্তু যাঁরা বিজেপি করবে, তাঁরা এইসব বাধা উপেক্ষা করেই প্রার্থী হয়েছে।” যদিও নিচুতলার বিজেপি কর্মীদের এই হুমকি ও প্রলোভন থেকে রুখতে প্রার্থীদের কোথাও আত্মগোপন করে থাকতে বলা হয়েছে। তবে ময়ূরেশ্বরের এক পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীকে তার বাপের বাড়িতে গিয়ে সিভিক ভলেন্টিয়ার্সের পক্ষ থেকে নাম প্রত্যাহারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। একই অবস্থা মহম্মদ বাজারে। সেখানে নাম প্রত্যাহারের সুযোগ এলে অনেক প্রার্থী নাম তুলে নেবেন বলে জানিয়েছেন। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিজেপির দাবি যদি মনোনয়নের ফের সুযোগ আসে তাহলে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এবার সতর্কতা রক্ষা করা হবে।
[ কংগ্রেস নেতাদের ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে দল ছাড়লেন ‘অপমানিত’ প্রধান ]
সিপিএমের প্রার্থীদের একজোট হয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছে দল। যাতে কেউ একা এসে ভয় দেখাতে বা হুমকি দিতে না পারে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, “আগে আদালতের রায় কী হয় দেখি। তাতে যদি অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় হবে। কারণ বিরোধীদের ভোট চাওয়ার অধিকারকে নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।” তবে বিরোধীরা যে যা বলুক তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে দলের তরফে বিরোধী কোনও প্রার্থীকে হুমকি দেওয়া বা প্রলোভন দেখানো হয়নি। দলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, “১৯ ব্লকের মধ্যে ১৪টি ব্লকে কোথাও প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। সেখানে তাদের কেন ভয় দেখাতে যাবে দল? বরং জোর করে তাদের নানা স্বপ্ন দেখিয়ে উন্নয়ন বিরোধী হিসাবে গ্রামে-গঞ্জে দাঁড় করানো হয়েছে। কিন্তু অনুশোচনা থেকে প্রার্থীরা অনেকেই নাম প্রত্যাহার করে নিতে চাইছে। আমাদের ধারণা ফের নির্বাচনের নতুন নির্দেশ এলেও এর থেকে আলাদা কিছু হবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.