নন্দন দত্ত, সিউড়ি: চাপ বাড়তেই উধাও ‘ভূতুড়ে’ প্রার্থী৷ শনিবারই মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন৷ চলছে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের পালা৷ ভোটের ময়দান থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহারে অদ্ভুতুড়ে চাপ সৃষ্টির অভিযোগও উঠছে বিরোধীদের বিরুদ্ধে৷
পরিসংখ্যান বলছে, বাড়তি মনোনয়নের দিনে বীরভূম জেলা পরিষদে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন ১৩ জন প্রার্থী। যাদের অধিকাংশ প্রার্থী প্রতীক ছাড়াই বিরোধীদের দলের নামে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বিরোধীদের দাবি, এরা ভূতুড়ে প্রার্থী। যার অধিকাংশ দু’দিনে প্রত্যাহার করেছে৷ বাকিরা আজ, শনিবার সব ভূতুড়ে উঠে যাবে বলে আশা শাসক থেকে বিরোধীদের৷
অতিরিক্ত দিনে ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের ২৬ নম্বর আসনে জেলা পরিষদের নির্দল প্রার্থী ছিলেন দুরখি গ্রামের সুদীপ সরকার। তিনি তারাপীঠের একটি হোটেলে কাজ করেন। তার বাড়ির সকলে তৃণমূল করে৷ রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের ২৯ নম্বর আসনে জেলা পরিষদের নির্দল প্রার্থী ছিলেন কুসুম্বা গ্রামের মিঠুন দাস। রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লকের ৩৪ নম্বর আসনে জেলা পরিষদে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী হয়েছিলেন ফুলুডাঙ্গা গ্রামের মিনারুন শা। তার দাদা মান্নার শা এবার একই আসনে জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী। নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের ৩৯ নম্বর আসনে জেলা পরিষদ সিপিএম প্রার্থী ছিলেন বাউটিয়া গ্রামের বচ্চন রবি দাস। নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের ৩১ নম্বর আসনে জেলা পরিষদের সিপিএম ভূতুড়ে প্রার্থী করা হয়েছে জাহাঙ্গির করিম নামে বারা গ্রামে এক ব্যক্তিকে। ওই আসনে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন আবু জাহের রানা৷ তাঁরই ভাগ্নে জাহাঙ্গির৷
সিপিএমের প্রস্তাবিত প্রার্থী ছিলেন খায়রুল হাসান৷ মুরারই ১ নম্বর ব্লকের ৪২ নম্বর আসনে জেলা পরিষদের বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন সঞ্জীব কুমার ভকত৷ তার দাদা কালু ভকত এবার রাজগ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন। মুরারই ২ নম্বর ব্লকের ৩৫ নম্বর আসনে জেলা পরিষদের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী হয়েছেন হাবিসপুর গ্রামের সামসুনেহার বেগম। এরা সকলেই নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন৷ এরা যে ভূতুড়ে প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিনেই তাদের বিরুদ্ধে রামপুরহাট মহকুমা শাসকের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছেন বিরোধীরা৷বিরোধীদের অদ্ভুতুড়ে চাপ দেওয়ার অভিযোগও উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ময়ূরেশ্বর এক নম্বর ব্লকের কানাচি গ্রাম থেকে বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য লিপিকা সোরেন৷ বৃহস্পতিবার রাতে তার বাড়িতে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ নিয়ে হাজির হয় পুলিশ৷ লিপিকার স্বামী রঞ্জিত বাসকি জানান, পুলিশ এসে বলে একটি লোক বিদ্যুতের তার নিয়ে এসে ঘরে টাঙিয়ে ছবি তুলতে থাকে। দাবি করে ঠিকাদার পথিক মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে৷ নচেত পুলিশ তাকে জেলে পাঠাবে। রঞ্জিতের দাবি, তাঁর বাড়িতে হুকিংয়ের কোনও সম্পর্ক নেই৷ বরং তাঁরা টাঙাতে গেলে আমি বাধা দিলে, সেই ছবি মোবাইলে তুলে আমাদের ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা হচ্ছে৷ পুলিশ সরাসরি বলছে প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করে নিলে সব ছাড় মিলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.