সুমিত বিশ্বাস,পুরুলিয়া: এ যেন মনোনয়নেই ভোটের বিজয়োল্লাস! যখন প্রায় সারা রাজ্য জুড়ে মনোনয়নকে ঘিরে অশান্তি চলছে তখন পুষ্পবৃষ্টি, শঙ্খধ্বনির মধ্যে প্রায় ২৩ কিমি বাইক চালিয়ে ভিকট্রি দেখিয়ে সোমবার মনোনয়ন জমা করলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুজয় বন্দ্যেপাধ্যায়।
[ মিলেছে শুধুই বঞ্চনা, পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত ছিটমহলের বাসিন্দাদের ]
তৃণমূলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুজয় বন্দ্যেপাধ্যায় পুরুলিয়া জেলা পরিষদের ২৫ নম্বর আসনে ঝালদা মহকুমা শাসক কার্যালয়ে মনোনয়ন পেশ করেন। তিনি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হওয়ার পর সেভাবে গাড়ি ছাড়া কোথাও যেতেন না। কিন্তু এদিন তিনি তার গ্রাম পুঞ্চা থানার লাখড়া থেকে তাঁর ‘লাকি’ বাইকে চড়ে বাগদা, পুঞ্চা, মানবাজার হয়ে মহকুমা শাসক কার্যালয়ে আসেন। আর এই যাত্রাপথে চলে পুষ্পবৃষ্টি, শঙ্খধ্বনি। তিনি দু’–একজন কর্মীকে নিয়ে ঘর থেকে বার হলেও বাগদা–র পর থেকে তাঁর পিছনে এক একটা করে বাইক বাড়তে বাড়তে তিনশোর বেশি হয়ে যায়। মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে পৌঁছোনোর আগে যেন বাইক মিছিলের রূপ নেয়। এদিন তিনি প্রায় তেইশ কিমি বাইক চালান একেবারে ট্রাফিক বিধি মেনে। মাথায় হেলমেট নিয়ে, পায়ে জুতো পরে বাইকের এক্সেলেটর ধরেন। আসলে তিনি যে আঞ্চলিক পরিবহণ বোর্ডের সদস্য! তাই মনোনয়ন পর্বে বাইক চালানোর ক্ষেত্রে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’–এর স্লোগানটিকে মেনে চলেন। ফলে তাঁর এই নিয়ম–বিধি মেনে চলাকে তারিফ করেন মনোনয়ন কেন্দ্রে থাকা পুলিশ।
[ ভোটের আগেই বীরভূম জয়, আবির খেলায় মাতলেন তৃণমূল সমর্থকরা ]
মনোনয়ন জমা করে ভিকট্রি দেখিয়ে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দলের নেতা–কর্মী-সহ সাধারণ মানুষের এই উৎসাহ দেখে খুব ভাল লাগল। আসলে এই বাইক আমার কাছে খুব লাকি। ২০০৩ সাল থেকে এই বাইক আমার কাছে রয়েছে। প্রতিবার এই বাইকেই মনোনয়ন করতে যাই। তাই এভাবে বাইকে এলাম। তবে মনোনয়ন পর্বেই এমন আবহ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের জন্যই। তিনি যেভাবে এই এলাকার উন্নয়ন করেছেন তাতে এখানকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষজন তৃণমূল ছাড়া আর কিছুই ভাবতেই পারেন না। আক্ষরিক অর্থেই রাজ্যে তৃণমূলের কোনও বিকল্প নেই।”
[ মাও হানায় নিহত পরিবারের সদস্যকে সভাধিপতির আসনে প্রার্থী তৃণমূলের ]
সেই বাম জমানা থেকে সিপিএমের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন দলের এই বরিষ্ঠ নেতা। তৃণমূলের জন্মলগ্ন অর্থাৎ ১৯৯৮ সাল থেকে টানা তিনবার (১৯৯৮, ২০০৩, ২০০৮) তিনি পুঞ্চা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হয়ে বিরোধী দলনেতার ভূমিকা পালন করেন। তারপর ২০১৩ সালে দল তাকে জেলা পরিষদের প্রার্থী করলে দলনেতা হয়ে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ দেয়। গতবার পুঞ্চার যে ২৪ নম্বর আসন থেকে তিনি জেতেন সেই আসন এবার মহিলার জন্য সংরক্ষিত। তাই পাশের অর্থাৎ ২৫ নম্বর আসন থেকে দাঁড়াতে হল তাকে। তবে তিনি বলেন, “এই ২৫ নম্বর আসনটিই আমার এলাকা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২৪ নম্বর আসনে লড়াই শক্ত ছিল তাই দলের নির্দেশে সেখান থেকে লড়াই করি।”
ছবি: অমিত সিং দেও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.