সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মাথায় মুকুট। গলায় রজনীগন্ধার মালা। সঙ্গে ব্যান্ডপার্টি। তাসাপার্টিও। চটুল গানের সুরে গমগম করছে। বারাতি বা বিয়েবাড়ির লোক যাচ্ছে ভেবে অনেকেই রাস্তার ধারে ভিড় জমান। ভুল ভাঙে অবশ্য একটু পরেই। দেবীর বেশে চলেছেন মহিলা প্রার্থী।
সোমবার সকালে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিনে এভাবেই চমক দিলেন পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূলের এক মহিলা প্রার্থী। ‘বারাতি’ নিয়ে বর্ধমান-১ ব্লকে গিয়ে মনোনয়ন দাখিল করলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬ নম্বর সংসদে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন ডুনই মাণ্ডি। এই কেন্দ্রটি তফসিলি উপজাতি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। এদিন জাঁকজমক করে তিনি মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখলেন।
[ মানুষের সমর্থন না থাকলে পদ্মের একটা পাপড়িও ফুটবে না: পার্থ ]
স্মরণীয় করে রাখার আরও কারণও রয়েছে। এই এলাকায় তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায় থেকে কেউ প্রথমবার পঞ্চায়েতে প্রার্থী হলেন। তাও আবার মহিলা। তাই তাঁদের মধ্যে উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মফিজুল রহমান বলেন, “বাম আমলে ওই সম্প্রদায়ের মানুষকে শুধু ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। উন্নয়ন হয়নি। তৃণমূল সরকার উন্নয়ন করেছে। ওই সম্প্রদায় থেকে কাউকে প্রার্থী করেছে। তার উপর একজন মহিলাকে প্রার্থী করেছে।” সেই কারণেও উৎসাহ আরও বেশি ছিল বাসিন্দাদের মধ্যে। মফিজুল জানান, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন দিনটিকে দীর্ঘদিন মনে রাখার জন্য আবেগ চেপে রাখতে পারেননি। তাঁদের দেবীর বেশে মহিলাকে সাজিয়ে তোলেন। তারপর গান-বাজনা সহযোগে শোভাযাত্রা করে কামনাড়ায় বিডিও কার্যালয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে নিয়ে যান।
[ মিলেছে শুধুই বঞ্চনা, পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত ছিটমহলের বাসিন্দাদের ]
ডুনই জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে শরিক হতে প্রার্থী হয়েছেন। এদিন প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেও কার্যত জয়ীও হয়ে গিয়েছেন তিনি। তাঁর কেন্দ্র থেকে বিরোধীদের কোনও মনোনয়ন পত্রই জমা পড়েনি। ফলে বেলকাশের সদস্য হিসেবে কার্যত নির্বাচিত হয়ে গেলেন এদিনই। সরকারিভাবে ঘোষণার অপেক্ষায় ডুনই।
ছবি: মুকলেসুর রহমান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.