ধীমান রায়, কাটোয়া: অনুগামীরা পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট না পাওয়ায় দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী তথা মঙ্গলকোটের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি। কিন্তু তার এই বিদ্রোহকে আদপেই আমল দিতে চান না মঙ্গলকোটের দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল।
[ নেতাদের বিলাসে ক্ষোভের পাহাড়, বাঁকুড়ায় শাসকের প্রতিপক্ষ ‘বিক্ষুব্ধ’রাই ]
সোমবার কলকাতা যাওয়ার পথে বিশেষ কারণে মঙ্গলকোটের কৈচরে দলীয় কার্যালয়ে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি প্রসঙ্গ তাঁর সামনে তোলা হয়। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি সম্প্রতি সরকারি গাড়ি ও দেহরক্ষী ত্যাগ করেছেন দলের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে। এ নিয়ে মতামত জানতে চাওয়া হয় অনুব্রত মণ্ডলের কাছে। অনুব্রত সাফ বলেন, ‘কে কী রাখবে, আর কে কী জমা দেবে সেটা তাঁর ব্যাপার। আমি এসব নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’
[ দলীয় কার্যালয়ে বসবে কে? গোষ্ঠী কোন্দলে জখম শাসকদলেরই ৫ কর্মী ]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোটের মাথরুন গ্রামে গাজন উৎসবে অনুষ্ঠান চলাকালীন দু’দিন আগে কয়েকজনের মধ্যে একপ্রস্থ মারপিট হয়। তার রেশ ধরে রবিবার থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। তবে পুলিশের তৎপরতায় উত্তেজনা সামাল দেওয়া হয়। দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে প্রশাসন। জানা গিয়েছে, মাথরুনে উত্তেজনার খবর পেয়ে অনুব্রত মণ্ডল এলাকায় আসেন। তিনি কৈচরে ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে দলের কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। ছিলেন মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরি-সহ ব্লকের অন্যান্য নেতারা। অনুব্রত এদিন পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলেন। তিনি দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন যাতে এলাকায় কেউ কোনও ধরনের উস্কানি ছড়াতে না পারে। পুলিশকেও সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান তিনি। বেশ কিছুক্ষণ বৈঠকের পর কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন। তার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তাঁকে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরির প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।
[ একঘরে করতে বন্ধ পানীয় জল, শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগে সরব বিজেপি কর্মীরা ]
মঙ্গলকোটে পঞ্চায়েত ভোটে সবকটি আসনেই তৃণমূলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় জয়ী হয়েছেন। তবে অনুব্রত মণ্ডলের গোষ্ঠীর প্রার্থীরাই পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট পেয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলে খবর। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি এ নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। তিনি গত সপ্তাহে তার প্রতিবাদে নিজের দেহরক্ষী ও সরকারি গাড়ি জমা দিয়ে দেন। প্রকাশ্যে অনুব্রতর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি। রাজনৈতিক মহলে খবর দলের উপর চাপ বাড়াতেই সিদ্দিকুল্লা এই সিদ্ধান্ত নেন। তবে অনুব্রত যে এসবে আদৌ আমল দিতে রাজি নন, এদিন তিনি তা বুঝিয়ে দিলেন নিজস্ব মেজাজেই।
ছবি: জয়ন্ত দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.