ধীমান রায়, কাটোয়া: পঞ্চায়েত ভোটের (West Bengal Panchayat Election 2023)
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্ব শুরু হতেই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে অশান্তির খবর আসতে শুরু করেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলছে বিরোধী দলগুলি। ভোট ঘিরে রাজনৈতিক হিংসার মাঝেই ভিন্ন এক ছবি দেখা গেল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারে।
সোমবার ভাতারে বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে এসেছিলেন সিপিএমের (CPM) নেতা নজরুল হক। তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার পথেই নজরুল হক মুখোমুখি হন ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর সঙ্গে। আর সিপিএমের নেতাকে দাঁড় করিয়ে বিধায়ক হাসিমুখে তার কাছে জানতে চাইলেন, “সব ঠিক আছে তো। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় কোনও সমস্যা হয়নি তো?” আর বিধায়কের এই সৌজন্যে মুগ্ধ নজরুল হক। তিনি উত্তর দেন, ” না দাদা। আমাদের প্রার্থীদের এখনও পর্যন্ত কোনও অসুবিধা হয়নি। আমি নিজেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে এলাম।”
পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘন্ট প্রকাশের পর গত শুক্রবার থেকেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্ব শুরু হয়েছে। এদিন সোমবার ছিল তৃতীয় দিন। দেখা যায় তৃতীয় দিন পর্যন্ত শাসকদলের পক্ষ থেকে কোনও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়নি। তবে প্রথম দিন থেকেই বিরোধীদলগুলির প্রার্থীরা বিভিন্ন এলাকাতেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে শুরু করেছেন। ভাতার ব্লক সহ পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন ব্লকে ইতিমধ্যে সিপিএম ও বিজেপির (BJP) প্রার্থীদের কমবেশি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। তৃতীয় দিনে অর্থাৎ সোমবার ভাতার বিডিও অফিসে বেশকয়েকজন সিপিএমের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেখা যায়।
সিপিএমের ভাতার এরিয়া কমিটির সদস্য তথা সারাভারত কৃষক সভার পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সহ সম্পাদক নজরুল হক ভাতার পঞ্চায়েত এলাকার বামশোর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গত ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে ভাতার বিধানসভায় সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন। এদিন নজরুল হক ভাতার গ্রামপঞ্চায়েতের ৮ নম্বর বুথে দলের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন। পাশাপাশি তার সঙ্গে ছিলেন দলের আরও কয়েকজন প্রার্থী। নজরুল হক যখন মনোনয়নপত্র দাখিল করে বেরিয়ে আসছিলেন তখন বাইরে তার সঙ্গে দেখা হয় বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর। নজরুল হককে দেখেই এগিয়ে যান মানগোবিন্দবাবু। বিধায়ক তাঁকে দেখেই বলেন,” কি রে চুনি(নজরুলের ডাকনাম) নমিনেশন করলি? তোদের কোনও সমস্যা হয়নি তো?” পালটা হাসিমুখে নজরুল হক জবাব দেন,” না দাদা, সব ঠিকঠাক আছে। কোনও অসুবিধা হয়নি।”
মানগোবিন্দ অধিকারী পরে বলেন,”চুনি আমার পূর্ব পরিচিত। ছোট ভাইয়ের মতন। রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হতেই পারে। কিন্তু সৌজন্য থাকবেই। তাছাড়া আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই দিয়েছেন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনেই ভোট হবে। আমাদের দল কোনওরকমের হিংসাকে মদত দেয় না।”
উল্লেখ্য, এদিন মনোনয়ন দাখিল ঘিরে ভাতার বিডিও অফিসের সামনে ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা। পূর্ব বর্ধমানের ডিএসপি (ক্রাইম) শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত ও ভাতার থানার ওসি অরুন কুমার সোম দাঁড়িয়ে থেকে নজরদারি রাখছিলেন। বাইরের লোকজন অফিসের আশপাশে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.