নন্দন দত্ত, বীরভূমঃ লোকসভা নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সেমিফাইনাল ধরেই ময়দানে নামতে চলছে শাসক-বিরোধী দুই শিবির। সেই উত্তেজনায় বাড়তি পারদ চড়িয়েছে বীরভূম। বছরের প্রায় সমস্ত দিনই উত্তপ্ত থাকে রাজ্যের যে জেলা। ভোটের ঠিক একদিন আগে একই রাজনৈতিক উত্তেজনায় ফুটছে সমগ্র বীরভূম। ভোটের একদিন দেখা যাচ্ছে শাসক-বিরোধী বাদানুবাদের চিত্র।
[ভোটের দিন হতে পারে সন্ত্রাস, আশঙ্কায় কমিশনকে চিঠি সিপিএমের]
বীরভূমের ২২৪৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে মঙ্গলবার নির্বাচন হবে মাত্র ২৭৯টি আসনে। ৪৬৫টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে নির্বাচন হবে কেবল ৬০টিতে। পঞ্চায়েত ভোটের অনেক আগে থেকেই তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ঘোষণা করেছিলেন বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত নেত্রীকে উপহার দেবেন তিনি। সে কাজে অনেকাংশে সফলও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য কেষ্ট। অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থী দিতে পারেননি বিরোধীরা। কারণ হিসাবে প্রথম থেকেই অনুব্রত মণ্ডল ও তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের তির ছুঁড়েছে বিরোধীরা। তবে এসবে গুরুত্ব দিতে নারাজ কেষ্ট মণ্ডল। তিনি জানিয়েছেন, বিরোধীদের দেখিয়ে দিতে চান তাদের অভিযোগ কতটা অযৌক্তিক। উন্নয়নের নিরিখে তাদেরকেই সমর্থন করছেন বীরভূমের মানুষ। বীরভূমের একাধিক এলাকায় মনোনয়ন জমা দিতে না পারলেও রাজনগর, ময়ূরেশ্বরে নিশ্চিন্তে মনোনয়ন জমা দিয়েছে বিরোধীরা। এবিষয়ে তৃণমূল বীরভূম জেলা সভাপতির কটাক্ষ, ওখানে মশা কম ছিল তাই মশারির দরকার ছিল না।
[রাষ্ট্রপতি ভবনে জাতীয় পুরস্কার নিলেন নাগরাকাটার নার্স সোনালী সামন্ত]
বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় অভিযোগ করেছেন, শাসকের মদতে জেলার বিজেপি নেতা, সমর্থকদের মিথ্যা মামলায় জেলে পুরছে পুলিশ। তবুও বিজেপি কর্মী থেকে প্রার্থীরা সকলে লড়াইয়ের মানসিকতা নিয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি। গতবছর পর্যন্ত বীরভূমের মহম্মদবাজারের পঞ্চায়েত সমিতি ছিল বামেদের দখলে। গতবছর তা দখল করেছিল তৃণমুল কংগ্রেস। যদিও জেলা বাম নেতৃত্বের দাবি, নেতারা গেলেও বামপন্থী কর্মীরা তাদের সঙ্গেই আছেন। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম অভিযোগ করেছেন, রাজ্যে গণতন্ত্র শেষ হয়ে গিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে যাদের প্রতি মানুষের সমর্থন থাকবে তাদেরকেই মেনে নিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জেলার এই বর্ষীয়ান বাম নেতা। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এবার ১৬টি আসনে প্রতিদ্বন্ধীতা করা হচ্ছে। হাঁসন কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রদেশ কংগ্রেসে সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মিলটন রসিদ জানিয়েছেন, বীরভূমের যে ৬৬ শতাংশ আসনে নির্বাচন হচ্ছে তা যদি সুষ্ঠু পরিবেশে হয় তাবে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ৩০ শতাংশ আসন ধরে রাখতে পারবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.