Advertisement
Advertisement

Breaking News

Kurmi's pressure politics

WB Panchayat Poll 2023: জঙ্গলমহলে শেষ হতে চলেছে কুড়মিদের ‘প্রেশার পলিটিক্স’? জোর জল্পনা

তৃণমূল ভাল ফল করায় 'প্রেশার পলিটিক্স' কাজ দেবে না বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।

WB Panchayat Poll 2023: Kurmi's pressure politics may end soon । Sangbad Pratidin

ছবি:সুনিতা সিং।

Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 12, 2023 11:20 pm
  • Updated:July 12, 2023 11:20 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কুড়মিদের ‘প্রেশার পলিটিক্স’ কি শেষ হতে চলেছে জঙ্গলমহলে? বনমহলের চার জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরে তৃণমূলের প্রত্যাশার চেয়েও ভালো ফল হওয়ায় জঙ্গলমহলের রাজনৈতিক মহলে এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গলমহলের রাজনীতিতে কুড়মি একটা বড় ফ্যাক্টর। এই বিষয়টি চাউর করে দেওয়া হয়েছিল। বিশেষ করে পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে। এই তত্ত্বে এতটাই হাওয়া তোলা হয়েছিল যে পুরুলিয়া লোকসভা আসনে বহু বছর ধরে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই কুড়মি জনজাতির নেতাকে প্রার্থী করেছেন। তাছাড়া জঙ্গলমহলের পুরুলিয়ায় শাসক দলে কুড়মি জনজাতি নেতারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য দলের অভ্যন্তরে এতটাই কুড়মি হাওয়া তুলে রেখেছিলেন যে রাজ্য নেতৃত্বের বাইরে ভাবতেই পারত না। এবারের নির্বাচন সবকিছুকে ওলটপালট করে দিল। ফলাফলেই পরিষ্কার হয়ে গেল কুড়মি ভোট বড়সড় ফ্যাক্টর নয়। অথচ হাওয়া তোলা হয়েছিল শাসক দল তৃণমূল কুড়মি ভোট না পেলে জঙ্গলমহল থেকে মুছে যাবে। তৃণমূলের ভোট ব্যাংকে ব্যাপক ধস নামবে।

Advertisement

রাজনৈতিক মহল জানিয়েছে, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা ও বিধানসভার ভোটে এই জেলায় কুড়মি জনজাতির মানুষজনের ভোট অধিকাংশ ক্ষেত্রে গেরুয়া শিবিরে পড়েছিল। এবার কুড়মি ভোট অনেকাংশে এক জায়গায় পড়ায় বিজেপির ভোট ব্যাংকে ধস নেমেছে। কুড়মি জনজাতির অংশের একটা বড় ভোট ছাড়াই শাসক দল তৃণমূল ভালো ফল করায় তাদের এই ‘প্রেশার পলিটিক্স’-র কৌশল আর আগামী দিনে কাজ দেবে না বলেই মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল।

[আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তকে স্বস্তি দিতে বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের, টমেটো বিক্রি করবে মোদি সরকার]

তবে কুড়মি সামাজিক সংগঠনগুলি যেভাবে ভোটের (WB Panchayat Poll) রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে তাতে যে তাদের সামাজিক আন্দোলন ধাক্কা খাবে তা একেবারে পরিষ্কার বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ সামাজিক আন্দোলন এভাবে ভোটের রাজনীতিতে গিয়ে সফল হয় না। এই কুড়মি সংগঠনগুলি সরাসরি ভোটের রাজনীতিতে জড়িয়ে যাওয়ায় তিনটি ক্ষেত্রে ব্যাকফুটে চলে গেল বলে মনে করছে জঙ্গলমহলের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এক, নিজেদের দাবি দাওয়াই অনড় থেকে তাদের গুরুত্ব সরকারের কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হল। দুই, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে জনজাতির মধ্যেই দু’ভাগ। বুদ্ধিজীবী অংশ এই বিষয়টি একেবারেই মেনে নিতে পারছে না। সরকার বিরোধী আন্দোলনে তারা রাজ্যের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে নেওয়ায় তাদের দিক থেকে অনেকাংশে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

তৃতীয়, বিজেপির মতোই কুড়মি সংগঠনগুলিও ধর্মকে ব্যবহার করে ভোট করায় জঙ্গলমহলের মানুষ তা সমর্থন করেনি। আড়শার সেনাবোনা, লছমনপুরের মত একাধিক জায়গায় পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সহ পুলিশের কাছে অভিযোগ আসে রীতিমত গরাম থানে ভোটারদের নিয়ে গিয়ে কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে এইভাবে চাপ দেওয়া হয়। গণতন্ত্রের উৎসবে অগণতান্ত্রিকভাবে আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা (প্রধান নেতা )অজিতপ্রসাদ মাহাতো। তিনি বলেন, “এই অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। আমরা গরাম থানে গিয়ে প্রার্থনা করে তারপর ভোট দিতে গিয়েছি।” তাঁর কথায়, জঙ্গলমহল পুরুলিয়ায় কুড়মি অধ্যুষিত ১৩০০ টি গ্রাম রয়েছে। তার মধ্যে ৪০০ গ্রামে কুড়মি সমর্থিত নির্দল ছিল। তার মধ্যে ২০০ গ্রামে প্রার্থী জিতেছে। সম্পূর্ণভাবে ওই ১৩০০ গ্রামে কুড়মি সমর্থিত নির্দল থাকলে ফল আরও অনেক ভালো হতো। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের একটি নেগাচারি কমিটি রয়েছে। কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা সেই নেগাচারি মানার কথা বলাতেই তারা তাদেরকে সমর্থন করেন। হিসাব নিকাশের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে জঙ্গলমহলে পুরুলিয়ায় ৩৫ শতাংশ কুড়মি ভোটার রয়েছে। সেই জায়গায় দুটি পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়ার মধ্যে দিয়ে তাদের সাফল্য শতাংশের বিচারে দু’শতাংশ-র কম।একই চিত্র ঝাড়গ্রামেও। সেখানেও ৩৬ শতাংশ কুড়মি ভোট তাদের রয়েছে। সেখানেও মাত্র দুটি পঞ্চায়েত গড়তে পারে তারা।

[আরও পড়ুন: ‘বিজেপির এত টাকা কোন বিমানে আসছে তদন্ত করবে না ED?’, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম নিয়ে খোঁচা মমতার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement