নন্দন দত্ত: টেলিভিশনের পর্দা নয় এবার পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে শাশুড়ি-বউমার লড়াই চরমে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, শাশুড়ি ও তাঁর দুই বউমার মধ্যে মুখ দেখাদেখি প্রায় বন্ধ। ময়ূরেশ্বরের রাতমা গ্রামের এই ‘হয় শাশুড়ি নয় বউমা’র কিসসা ঘুরছে মানুষের মুখে মুখে। জয়ের আগে কেউ কাউকে এক টুকরো মাটি ছাড়তে রাজি নন। একই বাড়ির শাশুড়ি দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে। আবার দুই বউমা দাঁড়িয়েছেন বিজেপি ও সিপিএমের প্রতীকে। তিন প্রার্থীই নিজেদের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।
দক্ষিণগ্রাম পঞ্চায়েতের রাতমা গ্রামে বউমা-শাশুড়ির লড়াই এবার বীরভূমের পঞ্চায়েত নির্বাচনের লড়াইকে জমিয়ে দিয়েছে। গ্রামের পুকুরের এক পাশে থাকেন শাশুড়ি সন্তোষী লেট। তিনি এবার তৃণমূলের প্রার্থী। পুকুরের দু’প্রান্তে থাকেন দুই বউমা। বড় বউমা রুপালি লেট বিজেপি প্রার্থী। আর ছোট বউ মমতা লেট সিপিএম প্রার্থী। তিনজনেই এবার প্রথম রাজনীতিতে পা দিয়েছেন। প্রত্যেকের আশা তাঁরা জয়ী হলেই প্রধান হবেন। কারণ বিদায়ী পঞ্চায়েতে ছবি বাগদি এই গ্রাম থেকে জয়ী হয়ে প্রধান হয়েছিলেন।
[তৃণমূল প্রাণনাশের হুমকি দেয়নি, সাংবাদিক সম্মেলনে সাফ কথা নির্বাচন কমিশনারের]
সন্তোষী লেট বলেন, ‘ওরা ঘরে বউমা। কিন্তু রাজনীতিতে সম্পর্কের বালাই নেই। আমি জয়ী হলে ওদের সঙ্গে আর তেমন সম্পর্ক থাকবে কিনা জানি না। কেন ওরা জেনেশুনে আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াল?’ বিজেপির রূপালি বলেন, ‘আমাদের আদর্শ ভারতীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা। শাশুড়ির সন্মান অন্য জায়গায়। কিন্তু লড়াইয়ের ময়দানে এক ইঞ্চি মাটি ছাড়তে রাজি নই। প্রতিদিনই আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি। তাঁদের কাছে তুলে ধরছি দলের কথা।’ মমতা লেট সিপিএমের হয়ে দাঁড়িয়েছেন গ্রামবাসী আর দলের কথায়। তার একদিকে শাশুড়ি, অন্যদিকে জা। দু’জনের বিরুদ্ধে লড়ছেন নিজের কায়দায়। তার দাবি, ‘গ্রামের অনেক অন্য দলের ভোটার আমাকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন। সেটাই ভরসা।’
গ্রামে ৬৪৩ জন ভোটার। গতবার অনেকে তৃণমূলকে ৫০০ জন ভোট দিয়েছিল। এবারও তৃণমূল সে ব্যাপারে আশাবাদী। কিন্তু শাশুড়ি-বউমার লড়াই ৬ নম্বর সংসদের লড়াই জমিয়ে দিয়েছে। বিপাকে সন্তোষীদেবীর দুই ছেলে কার্তিক ও অশোক লেট। তাঁদের দাবি মা মায়ের মতো। আবার বউদের পাশে না দাঁড়ালে গৃহে অশান্তি। তাই আমরা নির্বাচন পর্যন্ত বউদের পাশেই আছি।
ছবি-সুশান্ত পাল
[পুড়িয়ে মারতে তৃণমূল প্রার্থীর বাড়িতে আগুন, অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.