সৌরভ মাজি, বর্ধমান: স্বামী বারবার নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি রেখা সরকার। একপ্রকার জোর করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টানে ২১ জুলাই কলকাতায় শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে স্বামীর সঙ্গে বাসে করে যাচ্ছিলেন বর্ধমানের ওই মহিলা। বরাহনগরের টবিন রোডের কাছে বাসেই সন্তান প্রসব করেন তিনি। একুশে জন্ম বলে কন্যাসন্তানের নাম রাখা হয়েছে একুশী। মঙ্গলবার কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সেই একুশী ও তার মাকে দেখতে গিয়ে চিকিৎসা-সহ অন্যান্য সহায়তার কথা জানালেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। শিশু ও তার মায়ের চিকিৎসা চলাকালীন কলকাতায় থাকার ব্যবস্থা, এমনকী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার যাবতীয় খরচ দল বহন করবে বলে জানিয়েছেন স্বপনবাবু।
মন্ত্রী বলেন, “ওই দম্পতি দলের একনিষ্ঠ কর্মী প্রতি বছর শহিদ দিবসে যোগ দেন। এবারও যাওয়ার সময় অধীরবাবু তাঁর স্ত্রীকে নিষেধ করেছিলেন অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় না যাওয়ার জন্য। কিন্তু রেখাদেবী শোনেননি। দিদির জন্য তিনি যাবেন বলেই জেদ করেন। বাসেই সন্তানের জন্ম হয়। সন্তানের নাম একুশী রেখেছেন বাবা-মা।” স্বপনবাবু এদিন রেখাদেবী ও একুশীর সঙ্গে দেখা করেন। হাসপাতাল সুপার, প্রিন্সিপ্যালদের সঙ্গে মা-মেয়ের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। অধীরবাবুর সঙ্গে দেখা করে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। স্রেফ কলকাতার থাকার ব্যবস্থা নয়ই, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর অধীরবাবু, তাঁর মেয়ে ও স্ত্রী বর্ধমানে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা তৃণমূলই করবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
গত রবিবার শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন শহরের বড়নীলপুর আমবাগান গভর্নমেন্ট কলোনির অধীর সরকার ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রেখাদেবী। বরাহনগরে বাস পৌঁছতেই প্রসব বেদনা ওঠে ওই মহিলার। বাসেই সন্তান প্রসব করেন তিনি। বরাহনগর পুরসভার কাউন্সিলর দিলীপনারায়ণ বসু ওরফে সুনু বসু ও অন্যান্য তৃণমূল নেতা-কর্মীরা মহিলা ও শিশুকন্যাকে প্রথমে বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভরতি করান। শিশুটির ওজন হয়েছিল মাত্র ১ কেজি ৩০০ গ্রাম। পরে দুইজনকেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে দুইজনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.