অরূপ বসাক, মালবাজার: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কলমের খোঁচায় চাকরি গিয়েছে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের। সেই চাকরিহারাদের তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্য়ের এক মন্ত্রীকন্যারও। যা নিয়ে মালবাজার এলাকায় তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য় করতে চাননি রাজ্যের মন্ত্রী।
শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্যের ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন মালবাজারের বিধায়ক বুলু চিক বড়াইকের মেয়েও। বুলুচিক বড়াইক শুধু বিধায়ক নন, রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরে স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীও বটে। তাঁর মেয়ে সুষমা চিক বড়াইকের নামও চাকরিহারাদের তালিকায় থাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মালবাজার ব্লকের রাঙ্গামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন রাঙ্গামাটি চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়েই প্রাথমিক শিক্ষিকা পদে কর্মরত ছিলেন মন্ত্রীকন্যা।
তবে শনিবারের আলাপচারিতায় চাকরি হারানোর প্রসঙ্গে সুষমা কিছু বলতে না চাননি। তবে মন্ত্রীর সাথে আলাপচারিতায় উঠে আসে মন্ত্রীকন্যার রাজ্যে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষাতে ইন্টারভিউ পর্যন্ত পৌঁছনোর কথা। মন্ত্রী বুলু চিক বড়াইক বলেন, “বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বিচার ব্যবস্থার ওপর সম্পূর্ণ আস্থা ও ভরসা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তেমন কোনও মন্তব্য আমি করব না।”
প্রসঙ্গত, ২০১৪ প্রাথমিক টেট পরীক্ষা নেয় পর্ষদ। এঁদের ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিচিউড টেস্ট হয় ২০১৬ সালে। সেবছরই প্যানেল প্রকাশিত হয়। সেই প্যানেলে মোট ৪২ হাজার ৫০০ জনের চাকরি হয়। এদের মধ্যে সাড়ে ৬ হাজার জন ছিলেন ডিএলএডে (D El Ed) প্রশিক্ষিত। বাকি ৩৬ হাজার ছিলেন অপ্রশিক্ষিত। সেসময় পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের চাকরি দেওয়ার পর শূন্যপদ অবশিষ্ট থাকলে তাতে নিয়োগ করা হবে অপ্রশিক্ষিতদের। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হল, যে ৪২ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ৩৬ হাজার অর্থাৎ সিংহভাগই ছিলেন অপ্রশিক্ষিত। মাত্র সাড়ে ৬ হাজার ছিলেন প্রশিক্ষিত। অভিযোগ, বেশ কিছু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরি পাননি, অথচ সংরক্ষণের নিয়ম না মেনে চাকরি দেওয়া হয়েছে অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.