নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ব্যতিক্রমী রথযাত্রায় মা তারা। বৃহস্পতিবার পিতলের রথে চড়েই তারাপীঠ ঘুরলেন বিকেলে। ব্যতিক্রমী অন্যদিকেও। কারণ, রথের রশি প্রথমে টানলেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে টানলেন বিজেপির রাজ্য নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনীতি দূরে রেখেই দু’দলের নেতারা রথের মতো এক পবিত্র উৎসবে শামিল হলেন।উত্তেজনা থাকলেও খুশি আপামর ভক্তকুল।
এ দিন মন্দিরের বাইরে মা তারাকে দর্শন করেন ভক্তরা। যদিও রথযাত্রায় তারাপীঠের এই রথে মা তারা কবে থেকে আসীন তার ইতিহাস এলাকাবাসীর জানা নেই। তবে মন্দিরের সেবাইত প্রবোধ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বইয়ের সূত্রে জানা যায় তারাপীঠের বিখ্যাত সাধক দ্বিতীয় আনন্দনাথ তারাপীঠে এই রথের প্রচলন করেছিলেন। প্রাচীন রীতি মেনেই এদিন বিকেলে মা তারাকে রথে চাপানো হল।
ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকেল চারটে। রাজবেশে মা তারাকে মূল মন্দির থেকে বের করে রথে বসানো হয়। তারপর ঘোরানো হয় তারাপীঠ। হাজার হাজার পূর্ণার্থী রথের রশিতে টান দেন। উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের আগে তারাপীঠ থেকেই রাজনৈতিক রথযাত্রা শুরু করতে চেয়েছিল বিজেপি। যার উদ্বোধন করার কথা ছিল সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর। আদালতের নির্দেশে সেই যাত্রা স্থগিত হয়ে যায়। কিন্তু দু’দলের উত্তেজনা একেবারে কমেনি।
ওই এলাকায় এবার তৃণমূলের থেকে বিজেপির ফল ভাল হওয়ায় দু’দলের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে রথের দড়ি টানতে বাধা দেওয়া হতে পারে বলে খবর রটে। যদিও প্রতি বছরের মতো রথের প্রথম দড়ি টেনে এলাকার বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি ছোট থেকে এই মেলায় আসি। যত দিন শরীর সুস্থ থাকবে তত দিন আমি রথের রশি টানতে আসব। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।”
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রথ তৃণমূলের একার সম্পত্তি নয়। মা কারও একার নয়। আমরা মায়ের কাছে প্রার্থনা করব এই অশুভ শক্তি, আসুরিক শক্তির বিনাশ হোক। সেই সঙ্গে মায়ের কাছে বীরভূম-সহ সারা রাজ্যের শান্তি কামনা করলাম।” তারাপীঠ প্রদক্ষিণ করিয়ে সন্ধ্যা আরতির আগে মূল মন্দিরে বসানো হয় রথ। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এই রথ থেকে ভক্তদের উদ্দেশে প্যাড়া, বাতাসা বিতরণ করা হয়। সেই প্রসাদ পেতে ভক্তদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কারণ এই প্রসাদ গ্রহণ করলে পুনর্জন্ম হয় না বলে কথিত আছে।
ছবি: সুশান্ত পাল
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.