দীপঙ্কর মণ্ডল: ব্যতিক্রমী মাধ্যমিক৷ ২০১৯এ কলঙ্কিত মাধ্যমিক৷ রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাসে সবচেয়ে নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছে এবার৷ প্রতিদিন পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গিয়েছে৷ যার জেরে বিধাননগর সাইবার থানার পুলিশ এবং পরে সিআইডি তদন্তে নেমেছিল৷ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে তদন্তও শুরু হয়৷
মঙ্গলবার ফলপ্রকাশের সময় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় নিজে বললেন, ‘৭৩ জন পড়ুয়ার কাছ থেকে মোবাইল পাওয়া গিয়েছিল৷তাদের প্রত্যেকের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে৷ আমরা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সন্ধান পেয়েছি৷ প্রশাসন সজাগ আছে৷’ প্রসঙ্গত, কল্যাণময় পরীক্ষা শুরুর আগে ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর কাছে এমন একটি সার্ভার আছে, যা থেকে গোটা রাজ্যের পরীক্ষা ব্যবস্থা তিনি পরিচালনা করতে পারেন, চালাতে পারেন নজরদারি৷ কোথাও কোনও দুর্নীতি হলে, তা কলকাতার নিবেদিতা ভবনে বসে দেখতে পাবেন বলেও দাবি করেছিলেন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়৷ কিন্তু তাঁর সমস্ত দাবি যে ভিত্তিহীন, তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল পরীক্ষা চলাকালীন লাগামহীনভাবে প্রশ্ন ফাঁস৷ বিভিন্ন জেলা থেকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গিয়েছে পরীক্ষা শুরুর ঠিক আধঘণ্টার মধ্যেই৷ সেসময় পর্ষদ সভাপতি প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছিলেন, এমনকী কোনও সাংবাদিক বৈঠকও করেননি৷ বলেছিলেন, উপরমহলের নির্দেশ আছে, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা যাবে না পরীক্ষা চলাকালীন৷
সূত্রের খবর, লাগাতার প্রশ্ন ফাঁসের কলঙ্কিত ঘটনায় বিধ্বস্ত কল্যাণময় পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন৷ তবে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি তা স্বীকার করেননি৷ আপনি কি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে কার্যত ক্ষুব্ধ হলেন পর্ষদ সভাপতি৷ বললেন, ‘আপনি কী করে জানলেন?আপনি প্রচুর প্রশ্ন করছেন, আর করবেন না৷’ আর এতেই স্পষ্ট হয়ে গেল পর্ষদ সভাপতি দায়িত্ববোধ৷ ফলপ্রকাশের পর পর্ষদ সূত্রে বলা হচ্ছে, পাশের হার ৮৬.০৭ শতাংশ, যা ইতিহাসে প্রথম৷ এত কিছু সত্ত্বেও কিন্তু ২০১৯এর মাধ্যমিক পরীক্ষা কলঙ্কিতই হয়ে রইল৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.