Advertisement
Advertisement

Breaking News

COVID-19

কোভিড চিকিৎসায় শর্তসাপেক্ষে ‘আয়ুর্বেদে’ সায় রাজ্যের

আয়ুর্বেদ হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবহার করেই নির্দিষ্ট দুই হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা চলবে।

WB health department gives conditional nod to ayurvedic treatment ove COVID-19| Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:May 15, 2021 1:38 pm
  • Updated:May 15, 2021 1:39 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: হাসপাতালে বসে টেস্টের জন্য সোয়াব সংগ্রহ হোক, বা সেফ হোমে থাকা রোগীদের দেখভাল। করোনা অতিমারীর গোড়া থেকেই আয়ুশ চিকিৎসকদের একাংশকে বিপর্যয় মোকাবিলার নানা ক্ষেত্রে নামানো হয়েছে। তবে সরাসরি কোভিডরোগীর চিকিৎসায় আয়ুর্বেদকে যুক্ত করা হয়নি। আর দেরি না করে সেটাও করে ফেলা হোক। এই মর্মে রাজ্য সরকারের কাছে এবার আরজি জানাল ‘পশ্চিমবঙ্গ আয়ুর্বেদ পরিষদ।’

বাংলার আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের নিয়ামক সংস্থার তরফে দেওয়া চিঠিতে স্বাস্থ্যসচিবকে পর্ষদের সভাপতি ডা. প্রণব সিংহরায় লিখেছেন, “কোভিড পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে শ্যামাদাস বৈদ্যশাস্ত্রপীঠ ও জে বি রায় স্টেট আয়ুর্বেদ হাসপাতালে যথাক্রমে ১০০ ও ৯৪টি বেডের ব্যবস্থা হচ্ছে। আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে অনুরোধ করছি, এই দুই হাসপাতালে এবার আয়ুর্বেদিক মতে কোভিড চিকিৎসার অনুমতি দেওয়া হোক।’

Advertisement

[আরও পড়ুন: দাম বাড়ছে ডিম-মাংসের, করোনা কালে পাতে অধরা প্রোটিন]

ওঁদের প্রস্তাব, প্রাথমিকভাবে উপসর্গহীন, মৃদু ও মধ্যম উপসর্গযুক্ত রোগীদের চিকিৎসার দায়িত্ব দেওয়া হোক আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের হাতে। আয়ুর্বেদ হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধানদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রণববাবু। ইতিমধ্যেই দু’টি আয়ুর্বেদ হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা। পরিকাঠামো পছন্দ হয়েছে। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, আয়ুর্বেদ হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবহার করেই ওই দুই হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা চলবে। অর্থাৎ ডাক্তার-নার্স তো বটেই, পঞ্চকর্ম ও বিরেচন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত চিকিৎসা সরঞ্জাম কাজে লাগানো যেতে পারে। কিন্তু আয়ুর্বেদিক ওষুধ? স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ইন্ডোরে রোগী ভরতি হলেও দুই আয়ুর্বেদ হাসপাতালেই আউটডোর চলবে। এখানে আসা রোগীরা আয়ুর্বেদ ওষুধ খেতেই পারেন। তবে হাসপাতালে ভরতি হওয়া রোগীদের মডার্ন মেডিসিন মতেই চিকিৎসা করা হবে। তবে মৃদু ও মধ্যম উপসর্গযুক্ত কোনও রোগী নিজের থেকে চাইলে আয়ুর্বেদ পথে চিকিৎসা পরিষেবা নিতেই পারেন। সেই পথও খোলা রাখা হচ্ছে। স্বাভাবতই এই সিদ্ধান্তে খুশি বঙ্গের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা।

ভারতে কোভিডের সূচনালগ্নেই তার মোকাবিলায় আয়ুশ প্রোটোকল প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। যাতে গুড়ুচি, অশ্বগন্ধা, আয়ুশ ক্বাথ, সুদর্শন ঘনবটি, বসন্ত মালতী রসের মতো শাস্ত্রসম্মত ওষুধের উল্লেখ করা হয়েছে। দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ আয়ুর্বেদ’, জয়পুরের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ আয়ুর্বেদ’-সহ দেশের প্রায় সব প্রথম সারির আয়ুর্বেদ হাসপাতালে এই সব আয়ুর্বেদ ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে। মন্ত্রকের দাবি, তাতে ভাল ফল মিলেছে। ভারতের প্রোটোকল অনুসরণ করে কোভিড চিকিৎসায় আয়ুর্বেদকে কাজে লাগিয়েছে শ্রীলঙ্কা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) দিল্লিতে প্রচলিত দেশীয় ওষুধের বিকাশের লক্ষ্যে গবেষণাকেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

[আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় আরও কড়া রাজ্য, আগামী ১৪ দিন বন্ধ বাস, মেট্রো-সহ সব গণপরিবহণ]

কিন্তু এত ‘সাফল্য’ সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের কোভিড চিকিৎসায় আয়ুর্বেদ সরাসরি যুক্ত হওয়ার অনুমতি পায়নি। অবিলম্বে সেই ঘাটতি দূর হওয়া বাঞ্ছনীয় বলে মনে করেন পর্ষদের সহ-সভাপতি তথা শ্যামাদাস বৈদ্যশাস্ত্রপীঠের অধ্যাপক ডা. প্রদ্যোৎবিকাশ কর মহাপাত্র। তাঁর বক্তব্য, মডার্ন মেডিসিন কোভিড চিকিৎসায় কোনও ‘স্পেসিফিক’ ওষুধের সন্ধান দিতে পারেনি, শুধু উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা চলছে। যেখানে আয়ুর্বেদশাস্ত্রে কোভিডের মতো ‘বিষম জ্বর’-এর চিকিৎসার স্পষ্ট নিদান মজুত। আয়ুর্বেদ পরিষদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সল্টলেক সিসিআরএএসের অন্যতম আধিকারিক তথা আয়ুশ-৬৪ ট্যাবলেট বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত নোডাল অফিসার ডা. দীপসুন্দর সাউ। তাঁর যুক্তি, “মৃদু্ ও মধ্যম উপসর্গযুক্ত রোগীর চিকিৎসায় আয়ুশ-৬৪ ট্যাবলেট-সহ বেশ কয়েকটি আয়ুর্বেদ ওষুধের কার্যকারিতা ইতিমধ্যে প্রমাণিত। পরিষদ চাইলে আমরা চিকিৎসার জন্য নিখরচায় আয়ুশ ৬৪ ট্যাবলেটের ব্যবস্থা করতে পারি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement