Advertisement
Advertisement

Breaking News

Cyclone Yaas

২৬ মে বাংলার উপকূলে আছড়ে পড়বে ‘যশ’, মোকাবিলায় কোমর বাঁধছে প্রশাসন

প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে নবান্নে আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।

WB Govt makes preaparation as Cyclone Yaas to make landfall in West on May 26| Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:May 20, 2021 7:52 pm
  • Updated:May 20, 2021 8:29 pm  

নব্যেন্দু হাজরা: বিকেলে নয়, ২৬ মে সকালেই ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ (Yaas)। ব্যাপক তান্ডবলীলা চালাতে পারে দিঘা এবং শংকরপুরেও। তাছাড়াও উপকূলীয় তিন জেলা দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক জায়গায় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সেকথা মাথায় রেখেই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সমস্ত রকম প্রস্তুতিই রাখছে রাজ্য সরকার। বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও নবান্নে আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একদিকে কোভিড দুর্যোগ আরেক দিকে কখনও আমফান কখনও সুনামি কখনও যশ। একটা সিরিয়াস দুর্যোগ আসছে। তার জন্য যা যা করার আমরা করেছি। সব জেলার জেলাশাসককে সতর্ক করা হয়েছে। সুন্দরবন এবং দিঘার উপকূলবর্তী এলাকার কাছাকাছি সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। সরকার থেকে যা যা করার, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের থেকে যা যা করার সব করবে। আমি নিজে আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছি। আবারও করব।” একই সঙ্গে আমফানে কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়েও এদিন সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “কেন্দ্র রাজ্যের পাওনা কিছু দেয়নি। একটা আমফান চলে গিয়েছে। আরেকজন টা টা বাই বাই করে আকাশের উপর দিয়ে ঘুরে চলে গিয়েছেন দেব বলে। আরেকটা আবার যশ আসছে। তার জন্য আবার আমাদের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। প্রতিবছর একটা করে দুর্যোগ।” তবে প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় রাজ্য সব দিক থেকে তৈরি আছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: অতীতের রেকর্ড ভেঙে একদিনে রাজ্যে করোনার বলি ১৬২ জন, সুস্থতার হার প্রায় ৮৯ শতাংশ]

এদিকে এখনও যা পূর্বাভাস, আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে ২২ মে শনিবার নাগাদ উত্তর আন্দামান সাগর এবং পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে। যা ২৪ মে নাগাদ ঘূর্ণিঝড় যশে পরিণত হবে। উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে তা ২৬ মে সকাল নাগাদ ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা গণেশচন্দ্র দাস বলেন, “নিম্নচাপই হোক কিংবা ঘূর্ণিঝড় প্রতিনিয়ত তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে। ২২ মে শনিবার নাগাদ উত্তর আন্দামান সাগর এবং পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে। যা ২৪ মে নাগাদ ঘূর্ণিঝড় যশে পরিণত হবে। ২৬ তারিখ বাংলা ও ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।”

এই নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতির মধ্যে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে রাজ্যের উপকূলের জেলাগুলিতে। কোনও কোনও জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতও হতে পারে। ২৫ মে থেকে এই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে এবং তা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে ছড়িয়ে পড়বে। তবে এই মুহূর্তে এ রাজ্যে গরম কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা কমবে না। ২৩ মে নাগাদ আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের বেগ থাকতে পারে ঘন্টায় ৬৫ কিমি। কিন্তু তা ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। হতে পারে ঘন্টায় ৭০ কিমি বেগ। ২৪ মে নাগাদ এই বেগ সর্বোচ্চ হতে পারে ঘন্টায় ৮৫ কিমি। যা হতে পারে মধ্য বঙ্গোপসাগরে। ২৫ মে যার বেগ আরও বাড়বে। অন্যদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলে ২৫ মে বিকেল নাগাদ তার বেগ থাকতে পারে ঘন্টায় ৬০ কিমি। তবে ২৬ তারিখ সকালের আগে আরও বাড়বে।

[আরও পড়ুন: একদিনে জোড়া রদবদল রাজ্য প্রশাসনে, সরলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দুই কর্তা]

আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে পরিস্থিতি উত্তাল হতে শুরু করবে ২৩ মে রবিবার থেকে। ২৪ থেকে ২৬-মে-র মধ্যে মধ্য বঙ্গোপসাগরের বড় অংশে ঢেউ-এর উচ্চতাও বেশি হবে। অন্যদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর-ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে সমুদ্র উত্তাল থাকবে ২৫-২৭ মের মধ্যে। আবহাওয়া দপ্তরের তরফে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ২৪ মে থেকে কেউ যেন গভীর সমুদ্রে না যান। আর গভীর সমুদ্রে যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁরা যেন ২৩ মের মধ্যে উপকূলে ফেরত আসেন।

‘যশ’ মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি শুরু পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের। ইতিমধ্যে জেলার ২৫টি ব্লকের বিডিও, ব্লক দুর্যোগ ব‍্যবস্থাপন আধিকারিক, স্বাস্থ‍্য আধিকারিক-সহ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা সেরেছেন জেলা দুর্যোগ ব‍্যবস্থাপন দপ্তরের কর্তারা। দিঘা, মন্দারমনি, রামনগর, নন্দীগ্রাম, হলদিয়ায় সমুদ্র এবং নদী উপকূলে রয়েছে। উপকূল এলাকার ৪৩টি মাল্টি পারপাস শেল্টারের পাশাপাশি সাড়ে চারশো স্কুলবাড়ি বিপদাপন্নদের আশ্রয় হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনের তরফে বৈঠক করে জানানো হয়, ২৩ তারিখের মধ্যে সমস্ত সাইক্লোন শেলটারগুলি প্রস্তুত রাখতে। চাল, ডাল, ত্রিপল ও খাদ্যপণ্যও মজুত করতে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement