সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতা দিবসের পর এবার শিক্ষক দিবস নিয়েও কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাত। শিক্ষক দিবসে স্কুলে ‘স্বচ্ছ ভারত’ নিয়ে রচনা ও অঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে বলেছিল কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক। কেন্দ্রের এই সার্কুলার কার্যত ধর্তব্যের মধ্যে আনছে না রাজ্য। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, এই নির্দেশিকা হাস্যকর। রাজ্য আগে যেভাবে শিক্ষকদের সম্মান জানাত সেভাবেই সম্মান জানানো হবে।
নানা ইস্যুতে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের বাদানুবাদ তীব্র হচ্ছে। সেই টানাপোড়েনে নবতম সংযোজন শিক্ষক দিবস। শিক্ষক দিবসে কী করতে হবে তা নিয়ে রাজ্যগুলির কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সচিব অনিল স্বরূপ। যেখানে বলা হয়েছে প্রতিটি স্কুলে শিক্ষক দিবসের দিন ‘স্বচ্ছ ভারত’ নিয়ে রচনা লিখতে হবে পড়ুয়াদের। পাশাপাশি এই বিষয়ে আঁকার প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে। কৃতীদের দিতে হবে পুরস্কার। স্কুলগুলির মধ্যে সেরা পড়ুয়াদের নিয়ে ব্লক স্তরে প্রতিযোগিতা হবে। তার পর তা কেন্দ্রীয় স্তরে নিয়ে যাওয়া হবে। আর এখানেই বেঁধেছে গোল। রাজ্য সরকার শুরুতেই এই নির্দেশিকা বিদায় করে দিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন কীভাবে শিক্ষক দিবস পালন করা হবে তা কাউকে শিখিয়ে দিতে হবে না। শিক্ষামন্ত্রী জানান, এধরনের নির্দেশিকা হাস্যকর। যেভাবে শিক্ষক দিবস পালন হয়ে আসছে সেভাবেই হবে।
৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসে কী করতে হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে স্কুলগুলিতে নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিয়েছে স্কুলশিক্ষা দপ্তর। সেখানে বলা হয়েছে অতীতে যেভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের সম্মান জানানো হত, তা করতে হবে। তৃণমূল সরকারের সময় থেকে প্রতি বছর শিক্ষক দিবসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষকদের সম্মান জানান। এবছর সেই পরিধি বাড়ছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর নজরুল মঞ্চে স্কুল, কলেজের শিক্ষকদের পাশাপাশি এবার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্মান জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ওই দিন পড়ুয়াদের জন্য মোটা খাতা এবং ব্যাগ দেওয়ার কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। তৃণমূলের জমানায় প্রাথমিক স্কুলে বিনামূল্যে জুতো দেওয়া শুরু হয়। এবার ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে ব্যাগ ও খাতা দেওয়া হবে। কেন্দ্রের এই নির্দেশিকা নিয়ে রাজ্যের শিক্ষাবিদদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ এতে অন্যায়ের কিছু না দেখলেও কোনও শিক্ষাবিদ এতে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন। তাদের মতে, শিক্ষক দিবসের মতো চিরাচরিত অনুষ্ঠানে ঘুরপথে প্রধানমন্ত্রীকে নিজের ব্যক্তিত্বের ছাপ বোঝাতে চাইছেন। স্বচ্ছ ভারত প্রচারের জন্য আর কি কোনও ক্ষেত্র ছিল না। প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.