সুমিত বিশ্বাস এবং গোবিন্দ রায়: পুরুলিয়া জেলার ঝালদা পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু (Congress Councilor Tapan Kandu) হত্যা মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। এবার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। এই মামলায় বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের দৃষ্টি আর্কষণ করা হতে পারে। দ্রুত শুনানির আবেদন জানাবে রাজ্য।
এদিকে রাজ্য সরকারের এহেন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে নিহত কংগ্রেসের কাউন্সিলরের পরিবার। নিহতের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর কথায়, “সিবিআই যখন চলে এসেছে তখন রাজ্য সরকার এভাবে বাধা দিচ্ছে কেন? নিশ্চয়ই এমন কেউ যুক্ত আছে, যাকে আড়াল করার চেষ্টা চলছে। রামপুরহাট কাণ্ডে তো রাজ্য বাধা দেয়নি।” যদিও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মতে, “ধামাচাপা দেওয়ার কোনও বিষয় নেই। তপন কান্দু হত্যা মামলায় রাজ্য পুলিশ ভাল কাজ করছিল। সমাধান প্রায় করে ফেলেছিল। রাজ্য মনে করেছে, এখানে সিবিআই তদন্তের কোনও অবকাশ নেই। তাই আদালতে গিয়েছে। পুরোটা আইনি ব্যাপার।”
গত ১৩ মার্চ ঝালদা (Jhalda)-বাঘমুন্ডি সড়কপথে গোকুলনগর গ্রামের কাছে আততায়ীদের হাতে খুন হন কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। পরের দিনই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তথা পুর কর্মী সুভাষ গড়াইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা শুরু হয়। তদন্তে সিট গঠন করা হয়। নিহতের ভাইপো তথা তৃণমূলের পুর প্রার্থী দীপক কান্দুকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৬ মার্চ সিটকে তদন্তে সাহায্য করে সিআইডি। ১৭ মার্চ আততায়ীর স্কেচ প্রকাশ করে পুরুলিয়া (Purulia) জেলা পুলিশ। খুনিকে ধরতে পারলে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু তদন্তের উপর ভরসা রাখতে পারেনি নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু (Purnima Kandu। ২৫ মার্চ সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন তিনি। ঠিক দু’দিন পর ২৭ মার্চ কেস ডায়েরি তলব করে হাই কোর্ট। নিহতের ভাইপো মিঠুন কান্দুকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশও দেয় আদালত। ১ এপ্রিল এই ঘটনায় অন্যতম মূল ষড়যন্ত্রকারী ঝাড়খণ্ডের বোকারোর জরিডি থানার গাইছাদ গ্রাম থেকে কলেবর সিং নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০ দিনের মাথায় ২ এপ্রিল ঘটনার কিনারা হয়। নিহতের দাদা নরেন কান্দু ও তার সহযোগী আসিক খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষকে ক্লিনচিট দেন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগান।
পুলিশ সুপারের এই ঘোষণার পরদিনই কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরুও করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (CBI)। এর মাঝেই উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.