সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনাতঙ্কে এবছর ঐতিহ্যবাহী পুরীর শ্রীক্ষেত্রের জগন্নাথ দেবের রথযাত্রায় প্রথমে স্থগিতাদেশ দিলেও শেষপর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ভক্ত সমাগম ছাড়াই রথযাত্রার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে বলে শীর্ষ আদালতকে অনুরোধ করেছিল কেন্দ্র। জনতাশূন্য রথযাত্রা রাজ্য সরকার নিশ্চিত করলে আপত্তি জানাবে না বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট।এর মধ্যেই আগামিকাল, মঙ্গলবার পূর্ণদিবস ছুটি ঘোষণা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান, দপ্তর বন্ধ থাকবে ওই দিন। যদিও করোনাতঙ্কে স্কুল-কলেজ-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে সরকারি কাজকর্ম সব বন্ধ থাকবে রথের ছুটি উপলক্ষে।
শ্রীক্ষেত্রের জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা নিয়ে টানাপোড়েন চললেও এবছর কিন্তু শতাব্দী প্রাচীন মাহেশের রথের চাকা ঘুরছে না। করোনার কোপে ৬২৪ বছরে প্রথমবার মাহেশের রথের রশিতে পড়বে না টান। ইসকনও এবার রথযাত্রা করছে না। বরং ডিজিটাল স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে ভারচুয়াল রথযাত্রায় শামিল হতে ভক্তদের জন্য বন্দোবস্ত করেছে ইসকন কর্তৃপক্ষ। রথযাত্রা না হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের বিভিন্ন রথযাত্রা কমিটি এবার মেলাও বসাতে পারছে না। যা নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সামনে রাজ্যের কয়েক লক্ষ মেলাকর্মী। মেলায় দোকান-পসরা সাজিয়েই যাদের বছরভর রোজগার তাঁদের জীবন-জীবিকা আজ প্রশ্নের মুখে। মেলাশিল্পীদের সংগঠনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করার কথা জানিয়ে। মেলা না হওয়ায় পাঁপড়-জিলিপি থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে বহু মেলাপ্রেমী মানুষকে।
উৎসবপ্রেমী বাঙালির কাছে আরও একটি কারণে রথের মাহাত্ম্য রয়েছে। সেটা হল, কথায় আছে, রথ টানলেই দুর্গা আসে। এই রথযাত্রার দিনই শারদোৎসবের ঢাকে কাঠি পড়ে যায় বলা চলে। কারণ, এইদিনই প্রতিমার কাঠামো পুজো হয়। বহু বারোয়ারি পুজো কমিটি এইদিন খুঁটিপুজো করে দু্র্গোৎসবের প্রস্তুতি শুরু করে। আচার-উৎসব, সবদিক থেকেই রথের গুরুত্ব বাঙালির জীবনে অপরিসীম। সেই ঐতিহ্যের রথযাত্রায় এবছর থাবা বসিয়েছে করোনা। তবে করোনাতঙ্কে রথের চাকা না ঘুরলেও রাজ্য সরকার সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.