ছবি: প্রতীকী।
কলহার মুখোপাধ্যায়: এবারের উচ্চমাধ্যমিকে (Higher Secondery) আশাতীত ফল করেছে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা। এই ফলাফলকে এক কথায় ঐতিহাসিক বলা যায়। এবার পাশের হার নব্বই শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। নব্বই থেকে ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে ৩০ হাজারেরও বেশি পড়ুয়া। আশি থেকে উননব্বই শতাংশ পেয়ে পাশ করেছে প্রায় পঁচাশি হাজার। এই ফলাফলের ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। ভাল বিষয় নিয়ে স্নাতক হওয়ার স্বপ্ন তৈরি হচ্ছে। প্রত্যাশার এই বিপুল চাপ সামাল দেওয়া যাবে তো? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের কর্তাদের মনে। কোন বিষয়ে কত আসন আছে সেই সংখ্যা জানতে চাইল দপ্তর। বিকাশ ভবন থেকে কলেজগুলিতে চিঠি চলে গিয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে কলেজগুলোকে তা জানিয়ে দিতে হবে।
এবারের উচ্চমাধ্যমিকের পরিসংখ্যান বলছে, ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে ৩০ হাজার ২২০ জন ছাত্র-ছাত্রী। আগের বছর এই সংখ্যাটা ছিল ৭৮১৮। অর্থাৎ এই গ্রেডে পাঁচ গুণ সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটেছে। ‘এ প্লাস গ্রেড’ অর্থাৎ ৮০ থেকে ৮৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে ৮৪ হাজার ৭৪৬ জন। গত বছর এই সংখ্যাটা ছিল এর অর্ধেক প্রায়। ৪৭ হাজার ৭৫৯ জন ছাত্র-ছাত্রী এই নম্বর নিয়ে পাশ করেছিল। এবার মোট পাশের হার ৯০.১৩ শতাংশ। গত বছর ছিল ৮৬.২৯ শতাংশ। ভাল ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়তে মরিয়া হয়ে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। তবে অন্যান্যবারের তুলনায় এবার পছন্দের বিষয় পাওয়াটা যে কিছুটা কঠিন তা মানছে অনেক কলেজ কর্তৃপক্ষ। নামকরা প্রায় সব কলেজের বক্তব্য, স্নাতকস্তরে ভরতির ক্ষেত্রে গত বছরের নিয়ম বজায় রাখা হয়েছে। ‘কাট অফ মার্কস’ অর্থাৎ ন্যূনতম নম্বরের ক্ষেত্রে খুব একটা পরিবর্তন কোনও কলেজই করেনি।
বেথুন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কৃষ্ণা রায় জানিয়েছেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রত্যাশা অবশ্যই বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অভিভাবক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত প্রত্যাশা যেন ভবিষ্যতের ক্ষতি না করে দেয়।” বারুইপুর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক চঞ্চলকুমার মণ্ডল বলেছেন, “সরকার যে রকম নির্দেশ দেবে সেই অনুযায়ী কাজ হবে।” তাঁর অবশ্য অনুমান, চাপ থাকলেও রাজ্যের কলেজগুলি তা সামলানোর ক্ষমতা রাখে। গুরুদাস কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “গত বছরের মতো এবারও ন্যূনতম নম্বর একই রয়েছে। ফলে চাপ থাকলেও ভরতিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।” সুরেন্দ্রনাথ কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ চিন্ময় সরকারের বক্তব্য, “অতিরিক্ত প্রত্যাশা যেন ক্ষতি না করে দেয়। ছাত্র-ছাত্রীদের বিষয় এবং প্রতিষ্ঠান বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে একবগ্গা মনোভাব রাখা উচিত হবে না। প্রথম পছন্দ না পেলে দ্বিতীয়র দিকে যাওয়া উচিত। প্রসঙ্গত, ১০ আগস্ট থেকে কলেজে ভরতির অনলাইন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.