Advertisement
Advertisement

Breaking News

আমফান

বাংলায় ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে ঘূর্ণিঝড় আমফান, মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্য সরকার

কৃষকদের বোরো ধান কেটে নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

WB Government ready to fight with cyclone Amphan
Published by: Sayani Sen
  • Posted:May 18, 2020 7:06 pm
  • Updated:May 18, 2020 7:07 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ক্রমশই বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান। দিঘা থেকে নশোরও বেশি কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বুধবার বিকেল বা সন্ধের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আমফান দিঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়া উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। হতে পারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। তাই ঘূর্ণিঝড় সামাল দিতে কোমর বেঁধে প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। দিঘায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সতর্কতামূলক প্রচার। পৌঁছেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্যত্র। মৎস্যজীবীদের সমুদ্র থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দিঘার মতো নামখানা, বকখালি, সাগর, পাথরপ্রতিমা ও কাকদ্বীপের উপকূলবর্তী এলাকায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে চলছে মাইকিং। সমস্ত ফ্লাডসেন্টার ও স্কুলগুলিকে ত্রাণশিবির হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন ঘোড়ামারা দ্বীপ থেকে মানুষজনকে মূল সাগর ভূখণ্ডে সরিয়ে নিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও কাকদ্বীপ, সাগর, পাথরপ্রতিমা ও নামখানা ব্লকের প্রত্যন্ত উপকূল এলাকার মানুষজনকেও বিপদের আশঙ্কায় নিরাপদ দূরত্বে ফ্লাডসেন্টার এবং স্কুলবাড়িগুলিতে সরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। তাঁদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ত্রাণসামগ্রীও মজুত করা হয়েছে। বুলবুলের তাণ্ডবের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই প্রস্তুত রাখা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনীকেও। ডায়মন্ড হারবারে খোলা হয়েছে একটি কন্ট্রোলরুম।

Advertisement

ডায়মন্ড হারবারের সহ মৎস্য অধিকর্তা (মেরিন) জয়ন্ত প্রধান জানিয়েছেন, নদী বা সমুদ্রের ধারে বসবাসকারী মৎস্যজীবীদের অবিলম্বে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় দেওয়ার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও নদীতে নৌকা, ট্রলার এমনকি যাত্রীবাহী ট্রলার চলাচলের উপরেও জারি রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ছোট নৌকা নিয়ে নদীতে বা সুন্দরবনের খাঁড়িতে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে। আয়লা ও বুলবুল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনের অস্থায়ী ও অপোক্ত নদীবাঁধগুলির উপর কড়া নজর রাখা হয়েছে। সেচ দপ্তরের কর্মী ও আধিকারিকদের যে কোনও পরিস্থিতির দ্রুত মোকাবিলা করার জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ঝড় পরবর্তী অবস্থা মোকাবিলায় বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মী ও আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

[আরও পড়ুন: জোটেনি খাবার-জল, টানা ১৫ দিন সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরলেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকেরা]

প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান মূলত হাওড়ার শ্যামপুর ১ ও ২, বাগনান ১ ও ২ এবং আমতা ২ নম্বর ব্লক এলাকায় গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। খুব সামান্য প্রভাব ফেলার আশঙ্কা উলুবেড়িয়া ১ ও সাঁকরাইল ব্লকেও। প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন, শ্যামপুর ১ ও ২ ব্লক বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী। তাছাড়া এখানেই মিলিত হয়েছে হুগলি ও রূপনারায়ণ। ফলে এখানে আমফানের প্রভাব যথেষ্ট বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। শ্যামপুর ১ ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, তারা নদী তীরবর্তী দোকানঘর থেকে লোকেদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তাঁদের থাকার জন্য ইতিমধ্যে ব্লক এলাকার ১৮৭টি স্কুলকে আশ্রয় শিবির হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পঞ্চায়েতের কর্মী ও প্রধান-সহ অন্যান্য কর্তাদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া যাতে কোনও মৎস্যজীবী নদীতে না নামেন সেই নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। নদীঘাটে মোতায়েন রাখা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী।

শ্যামপুর ২ ব্লকে প্রায় আড়াই হাজার এবং বাগনান ২ ব্লকে দেড় হাজার বিপজ্জনক বাড়ি চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই বাড়িগুলির বাসিন্দাদেরও অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাগনান ১ ব্লক ও আমতা ২ ব্লকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এছাড়াও জেলার কৃষকদের চাষের ক্ষতি এড়াতে বোরো ধান কেটে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা কৃষি আধিকারিক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “হাওড়ায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। তবে ৮০ শতাংশের বেশি ধান কাটা হয়ে গিয়েছিল। চাষিদের সুবিধার্থে হার্ভেস্টার দেওয়া হয়েছে উদয়নারায়ণপুর, আমতা ১ ও ২ ব্লকে। আমফান আসার আগেই যাতে কৃষকরা দ্রুত ধান কেটে গোলাজাত করতে পারেন সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পান চাষিদের বরোজের খুঁটি মজবুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

[আরও পড়ুন: বাবার যৌন লালসার শিকার দুই নাবালিকা সন্তান, শ্রীঘরে অভিযুক্ত]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement