ছবি: শান্তনু দাস
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বঙ্গে চলছে বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Polls 2021)। বৃহস্পতিবার সম্পন্ন হল দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। এবারের নির্বাচনে প্রচারে ঝড় তুলেছে সবপক্ষই। অনেকেই নিজের প্রচারে খরচও করছেন দেদার টাকা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও হাতে নগদ মাত্র পাঁচশো টাকা নিয়েই কোটিপতিদের সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন এসইউসিআইয়ের (SUCI) সাঁইথিয়া (Sainthia) বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী নবকুমার দাস। পেশায় ক্ষেতমজুর নববাবুর চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে সাকুল্যে চার হাজার টাকা। যদি নবকুমারবাবুর নগদের হাল এমন হয় তাহলে হাঁসন কেন্দ্রের প্রার্থী যুথিকা ধীররের সম্পদ বলতে মাত্র দু’গ্রাম সোনা। বৃহস্পতিবার সিউড়ি-রামপুরহাটের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া পাঁচ এসইউসিআই প্রার্থীদের বাকিদের হাল এমনই।
এই প্রসঙ্গে এসইউসিআই দলের জেলা সম্পাদক মদন ঘটক জানালেন, তাদের পাঁচ প্রার্থী গণ আন্দোলন থেকে উঠে এসেছেন। তাঁরা একরকম দলের সর্বক্ষণের কর্মী। তাই তাঁদের সম্পদ মানুষের জন্য আন্দোলন গড়ে তোলা। সাঁইথিয়ার প্রার্থী নবকুমার দাস, সিউড়ির নিতাই অঙ্কুর, মুরারইয়ের আনসারুল শেখ, হাঁসনের যুথিকা ধীবর এবং রামপুরহাটের ফরিদা ইয়াসমিন। এই পাঁচ প্রার্থী এদিনই জেলার দুই প্রশাসনিক ভবন রামপুরহাট ও সিউড়িতে মনোনয়ন জমা দিলেন। দুটি জায়গাতেই মিছিল করে প্রার্থীদের মনোনয়ন কেন্দ্রে নিয়ে আসেন দলীয় কর্মীরা। সেখানেই পাঁচজনের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, পাঁচ জনের তিনজনই নেহাতই অতি সাধারণ বাড়ির প্রতিনিধি।
সিউড়ি দুই ব্লকের হাটইকরা গ্রামের বাসিন্দা নবকুমার দাস। বছর ৬৬-র খেটে খাওয়া মানুষটি এ নিয়ে দ্বিতীয়বার নির্বাচনের ময়দানে নেমেছেন। তার দেওয়া হলফনামা সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর কাছে সম্পদ বলতে স্ত্রীর কাছে থাকা ২১ গ্রাম সোনার গয়না। এছাড়া স্ত্রী ও তাঁর কিছু জমিজমা আছে। দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যু হলেও মানুষের পাশ থেকে কখনও সরে আসেননি নবকুমারবাবু। বাবা কার্ত্তিক দাস ছিলেন তেভাগা আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা। তাই নবকুমারবাবুর দাবি জন্মসুত্র থেকেই তিনি দলের কর্মী।
সিউড়ির প্রার্থী নিতাই অঙ্কুর স্থানীয় ঝোড়া মাঠ প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। পেশায় লোকশিল্পী। গানের মাধ্যমে লোক আন্দোলন করে আসছেন ৪০ বছর ধরে। তাঁর জীবন বিমা, পাকা বাড়ি অস্থাবর, স্থাবর মিলিয়ে ৬ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা আছে। যদিও হাতে নগদ বলতে ১৪০০ টাকা। হাঁসন কেন্দ্রের প্রার্থী যুথিকা ধীবর দলের সর্বক্ষণের কর্মী। তার ব্যাঙ্কে মজুত আছে ৩৯০৯ টাকা। লড়াই করতে নামছেন হাতে নগদ ১১৫০ টাকা নিয়ে। মুরারই কেন্দ্রের প্রার্থী পেশায় খাদান কর্মী। রাজগ্রামের বন্ধ এসবিডি কারখানার শ্রমিক নেতা। তার হাতে নগদ বলতে ৪৫০০ টাকা। ব্যাংকের যৌথ অ্যাকাউন্টে জমা আছে ৭০০০ টাকা। তবে সকলেরই কাঁধে ঝোলা আছে। মনে সাহস আছে। গণ আন্দোলনে পরীক্ষিত অভিজ্ঞতা আছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.