সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: শিল্পশহর রঘুনাথপুরের ‘জঙ্গলসুন্দরী শিল্পনগরী’তে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জঙ্গলমহল পুরুলিয়ায় হুটমুড়ার ময়দানে প্রশাসনিক জনসভা থেকে বৃহস্পতিবার সেকথা ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য বাজেটে বলা হয়েছিল, রঘুনাথপুরের এই ‘জঙ্গলসুন্দরী শিল্পনগরী’-তে ২,৫০০ একর জমিতে ৭২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে দেড় লক্ষ চাকরিও সুনিশ্চিত হবে।
এদিন বাজেটের সেই রেশ ধরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “‘জঙ্গলসুন্দরী কর্মনগরী’ রঘুনাথপুরে ৭২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থান হবে। বেকারদের আর ঘুরে বেড়াতে হবে না। ” সেই সঙ্গে তিনি দেউচা- পাঁচামিতেও লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানান। জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার ক্ষুদ্র শিল্প এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাজকর্মকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে মুখ্যসচিব ও জেলাশাসককে নির্দেশ দেন তিনি। চেম্বার্স অফ কমার্সকে স্পেশ্যাল ইনসেনটিভ দিয়ে ক্ষুদ্র শিল্পে সহায়তা করার কথা বলেন।
পশ্চিমবঙ্গ শিল্প উন্নয়ন নিগমের অধীনে রঘুনাথপুরে ‘জঙ্গলসুন্দরী কর্মনগরী’ তে মোট জমি রয়েছে ২৪৮৩.০৬ একর। তার মধ্যে ৬০০ একর জায়গা শ্যাম স্টিলকে দিয়েছে রাজ্য। তাদের প্রকল্প মূল্য ১,৮০০ কোটি টাকা। তাদের ওই প্রকল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হবে ৩৫,০০০। এই কারখানা গড়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রঘুনাথপুরে। রাজ্যের দেউচা-পাঁচামি কয়লা ব্লকের খনি রূপায়নের কাজও ভালভাবে এগোচ্ছে। পরীক্ষামূলক খননকার্য সন্তোষজনকভাবে শেষ হওয়ার পর খুব শীঘ্রই সেখান থেকে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু হবে। এই কাজে মোট ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে শিল্পায়নের প্রসারে তিনটি প্রধান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও ইকোনমিক করিডরের প্রস্তুতি চলছে । এই করিডর গুলি হল ডানকুনি-হলদিয়া, ডানকুনি- রঘুনাথপুর ও ডানকুনি- কল্যানী । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , “এই তিনটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর হলে শিল্পের প্রসার ঘটবে। রাস্তার পর রাস্তা জুড়ে শিল্প হবে। ডানকুনি- রঘুনাথপুর রাস্তা বর্ধমান থেকে বড়জোড়া হয়ে রঘুনাথপুরে মিশে যাবে। অনেকগুলো জেলা উপকৃত হবে।”
এই জেলায় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ ও বস্ত্রদপ্তর থেকে যে কাজ হচ্ছে তা উল্লেখযোগ্য। মোট ১৪টি ক্লাস্টার হবে। তাই এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ” এখানে ক্লাস্টার তৈরি হবে। জেলাশাসককে বলব চেম্বার্স অফ কমার্সের সঙ্গে বসতে। তাদের স্পেশাল ইন্সেন্টিভ দিয়ে ক্ষুদ্র শিল্পের কাজকে সাহায্য করতে হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাজকে সাহায্য করতে হবে। যাতে কর্মসৃষ্টির উন্মাদনা তৈরি করা যায়।” এই জন্য এই জেলায় মুখ্যসচিবকে তিনি একটি বৈঠক ডাকার কথা বলেন। পর্যটন শিল্পে এই জেলাতেও যে হোম স্টে চলছে তা তুলে ধরেন তিনি। এই কাজকে আরও ভালভাবে করার পরামর্শ দেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.