ছবি: প্রতীকী
বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: প্রার্থী কাঁটায় রক্তারক্তি পদ্ম শিবিরে। টাকার বিনিময়ে প্রার্থীপদ বিক্রির অভিযোগে বিজেপির সাংগাঠনিক জেলা সভাপতিকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হল। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কৃষ্ণনগরে।
কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকেই বিজেপির নেতা-কর্মী-সমর্থকদের একাংশের ক্ষোভ মাথাচাড়া দেয়। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে প্রার্থীপদ বিক্রি, দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই কৃষ্ণনগর উত্তর শহর সভাপতি শম্ভু দাস ইস্তফা দিয়েছেন। শহর-সভাপতি দাবি, তাঁর সঙ্গে কৃষ্ণনগর শহরের ৬ জন ওয়ার্ড সভাপতিও পদ ছেড়েছেন। এছাড়া ২০ জন বুথ সভাপতি-সহ দলের কয়েকজন বরিষ্ঠ কার্যকর্তা, মহিলা মোর্চার জেলা কমিটির দু’জন নেত্রীও একইপথে হেঁটেছেন।
প্রার্থী হওয়া নিয়ে চরম অসন্তোষের জেরে টানা পাঁচ দিন ধরে জেলা পার্টি অফিসে তালা মেরে রাখা হয়েছিল। শুক্রবার বিকেলের কার্যালয়ের তালা ভেঙে পার্টি অফিসে ঢোকেন বিজেপি কর্মীরা। সেখানে কৃষ্ণনগর পুরসভার বিজেপির প্রার্থী এবং নির্বাচনী এজেন্টদের নিয়ে বৈঠক চলছিল। তার মাঝেই দু’পক্ষের মধ্যে আচমকা গণ্ডগোল বেঁধে যায়। শুরু হয়ে যায় চিৎকার-চেঁচামেচি। অশান্তির মাঝে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসকে বেধড়ক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের একাংশ ওই ঘটনার পিছনে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
যদিও বিজেপির তরফে তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। তাঁদের অভিযোগ, “পার্টি অফিসে ঢুকে কয়েকজন দুষ্কৃতী এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। এর পিছনে তৃণমূলের চক্রান্ত রয়েছে।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি জয়ন্ত সাহা অভিযোগ উড়িয়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, “এটাই বিজেপির সংস্কৃতি। প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের জেরে গত কয়েকদিন ধরে দলীয় কার্যালয়ে তালা মারা ছিল। এটা বিজেপি কর্মী সমর্থকদের একাংশের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। অথচ নিজেদের দোষ ঢাকতে ওরা তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলছে।”
এ বিষয়ে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদারের অভিযোগ, “শুক্রবার জেলা পার্টি অফিসে জেলা সভাপতি এবং কয়েকজন কার্যকর্তার উপস্থিতিতে পুরনির্বাচনের প্রার্থী ও নির্বাচনী এজেন্টদের নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠক চলছিল। বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসার সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী আমাদের জেলা সভাপতিকে আক্রমণ করে। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের বিশ্বাস এর পেছনে তৃণমূলের চক্রান্ত রয়েছে।” গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সন্দীপ মজুমদার। অবশ্য পুলিশের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, মৌখিকভাবে জানানো হলেও এ বিষয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.