Advertisement
Advertisement

Breaking News

CM Mamata Banerjee

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীর নামে সিলমোহর, তীব্র বিরোধিতা শিক্ষক সংগঠনের

কী বললেন শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় , নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়িরা?

WB Cabinet passes the decision of the Chief Minister being the chancellor of Government University, teacher organisations becomes furious | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 26, 2022 8:41 pm
  • Updated:May 26, 2022 11:06 pm  

দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্যপাল নয়, রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য (Chancellor) পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসাতে চেয়ে আনা প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। শিগগিরই এই নিয়ে বিধানসভায় সংশোধনী (Amendment) বিল আনতে চলেছে সরকার। বিধানসভায় এই সংক্রান্ত বিল পাশ হলেই রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা-সহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আভ্যন্তরীণ শিক্ষাগত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) উপর ন্যস্ত হবে। মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন। আবুটা, সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটির পাশাপাশি বাম ছাত্র সংগঠন ডিএসও-ও (DSO) প্রতিবাদ জানিয়েছে। আবার শিক্ষাবিদদের একাংশের মত, মুখ্যমন্ত্রী আচার্য হলে আখেরে ভালই হবে।

অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচারস অ্যাসোসিয়েশন বা আবুটা (ABUTA) লিখিত বিবৃতি দিয়ে নিজেদের বিরোধিতার কথা জানিয়েছে। তারা মনে করে, শিক্ষার উৎকর্ষের অনিবার্য শর্ত হল শিক্ষার স্বাধিকার। যেখানে শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে সরকারি বা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকবে না। উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্যপালের হাত থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বা রাজ্য সরকারের হাতে গেলে, সরকারি বা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা আদৌ কমে না। শিক্ষার স্বার্থে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকার শিক্ষা পরিচালনায় তাদের সরকারি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকুক। মুখ্যমন্ত্রী নন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হোন স্বীকৃত কোনও শিক্ষাবিদ। বিধানসভায় এই বিল পাশ করে শিক্ষা পরিচালনায় সরকারি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিরঙ্কুশ করার চেষ্টা হলে আবুটা সমস্ত সংগঠন-সহ জনগনকে যুক্ত করে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: প্রেমের টান, সংসার ছেড়ে টোটো চালকদের সঙ্গে ঘর বাঁধলেন দুই গৃহবধূ! চাঞ্চল্য বাগদায়]

মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যান্সেলর পদে বসানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন এআইডিএসও’র (AIDSO) রাজ্য সম্পাদক মণিশংকর পট্টনায়ক। তিনি প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর যে সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রিসভা গ্রহণ করেছে তার আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদটি সম্পূর্ণ শিক্ষা সংক্রান্ত পদ এবং এতদিন সেই পদে রাজ্যপালের মত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে আসীন রাখা যুক্তিসংগত ছিল না এবং তা দীর্ঘদিন ধরে চূড়ান্তভাবে গণতান্ত্রিক শিক্ষা চিন্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমরা বরাবরই তার বিরোধিতা করেছি। এই পদে মুখ্যমন্ত্রীর আসীন হওয়া শিক্ষাঙ্গনের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে আরো প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এই সিদ্ধান্ত শিক্ষাক্ষেত্রে সর্বস্তরে সংকীর্ণ দলীয়করণেরই অনুসারী পদক্ষেপ। রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরোধকে ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ রাজনৈতিক যা গণতান্ত্রিক শিক্ষা কাঠামোর পরিপন্থী। আমরা অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি করছি।”

সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক তরুণকান্তি নস্করের মতে, ”রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর যে সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রিসভা গ্রহণ করেছে, তার আমরা তীব্র বিরোধিতা করছি। আচার্য পদটি সম্পূর্ণ শিক্ষা সংক্রান্ত পদ এবং এতদিন সেই পদে রাজ্যপালের মত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে রাখা যুক্তিসংগত ছিল না। আমরা বরাবরই তার বিরোধিতা করেছি। রাজ্যপালের সংগে রাজ্য সরকারের বিরোধকে ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ রাজনৈতিক যা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পরিপন্থী। আমরা অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি করছি।”

[আরও পড়ুন: রাজ্যপালের বদলে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী, শুরু আইনি প্রক্রিয়া]

এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায়ের মত, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তিনি একজন রাজনীতিক। এই কারণে রাজ্যপালকে করা হয়। ইংরেজ আমল থেকে চলে আসছে এই প্রথা। সেই নিয়ম লঙ্ঘন করে সরকার মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি স্বাতন্ত্র্য হারাবে। শিক্ষায় প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে প্রবেশ ঘটবে, তার ফলে শিক্ষার সর্বনাশ হবে। আরেক শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ির কথায়, ”এতদিন ধরে যিনি রাজ্যপাল রয়েছেন, সেই জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) জন্যই এটা ঘটল। আচার্য হিসেবে রাজ্য কিছু ভুল করলে তিনি ধরিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু তিনি একটা বিলেও স্বাক্ষর করেননি। প্রত্যেক জায়গায় বাধার সৃষ্টি করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী আচার্য হলে ভালই হবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement