বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ভোটের আগে প্রকাশ্যে নদিয়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। নির্বাচনী কার্যালয়ে ঢুকে তৃণমূলের (TMC) প্রাক্তন কাউন্সিলরকে মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার আইএনটিটিইউসি নেতা তপন কুণ্ডু। শুক্রবার রাতে এই ঘটনার পর কৃষ্ণনগর উত্তরে (Krishnanagar Uttar) তৃণমূলের তারকা প্রার্থী কৌশানি মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে এই বিষয়টিকে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ বলতে নারাজ প্রার্থী কৌশানি। তাঁর দাবি, দলের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। এটা দুষ্কৃতীদের কাজ। ঘটনায় ছুরির আঘাতে জখম হয়েছেন আরও এক তৃণমূল কর্মী। বিষয়টি নিয়ে এখনও পরিস্থিতি উত্তপ্ত কৃষ্ণনগরের।
ঘটনা শুক্রবার সন্ধের পর। নদিয়ার কৃষ্ণনগর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝেরপাড়া এলাকায় তৃণমূল পার্টি অফিসে আচমকাই ঢুকে পড়েন আইএনটিটিএইউসি নেতা তপন কুণ্ডু ও তাঁর দলবল। তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর মলয় কুণ্ডুর উপর হামলা চলে বলে অভিযোগ। তাঁর অভিযোগ, ”নির্বাচনের কাজকর্ম সেরে এসে অফিসে সবেমাত্র আমি চায়ের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছিল। সেই সময় হকার্স ইউনিয়নের নেতা তপন কুণ্ডু তার দলবল নিয়ে এসে অফিসের মধ্যে ঢুকে হামলা চালায়। আমাকে প্রচণ্ড মারধর করে। চাকু বের করে আমাকে খুনের চেষ্টা করে। আমার বোন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এরপরও আমাকে বাঁচাতে গিয়ে চাকুর আঘাত লাগে এক তৃণমূল কর্মীর হাতে। রক্তে ভেসে যায়।”
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কৌশানি মুখোপাধ্যায় (Kaushani Mukherjee)। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ”কে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধী বা কে নাটক করছে, তা আমার জানার কথা নয়। তপন কুণ্ডু যদি তৃণমূলের লোকই হয়ে থাকেন, তিনি তাহলে কেন নির্বাচনী কার্যালয়ে ঢুকে আমাদের দলের প্রাক্তন কাউন্সিলরকে খুনের চেষ্টা করেছেন? কেনই বা নির্বাচনী কার্যালয়ের সমস্ত ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে দিয়ে অফিসে ব্যাপকভাবে ভাঙচুর চালিয়েছেন? আর যাই হোক, তাঁকে আমি দলের লোক বলে মানতে রাজি নই।পুলিশের কাছে বলেছি, নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকে যেন কোনওভাবেই বাইরে ছাড়া না হয়।” তপন কুণ্ডুকে গ্রেপ্তার না হলে আমরণ অনশন করার হুমকি দিয়েছেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রাক্তন ও আক্রান্ত কাউন্সিলর মলয় কুণ্ডু।
ঘটনার পর কৌশানি মুখোপাধ্যায় কোতোয়ালি থানায় গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। রাতেই তপন কুণ্ডুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তৃণমূল প্রার্থী কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে ‘বহিরাগত’ বলে আখ্যা দিয়ে তাঁর আসার আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন। কৃষ্ণনগর পুরসভার অন্যতম প্রশাসক অসীম সাহার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তা নিয়ে পোস্ট করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তবে বিজেপির বক্তব্য, ”তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রকাশ এটা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.