মলয় কুণ্ডু: জলের মতো কঠিন! একদিকে কেন্দ্রের ‘জল জীবন মিশন’। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের ‘জলস্বপ্ন’। কে কাকে জল দেবে, তা নিয়েই বিধানসভা ভোটে লেগেছে জোর লড়াই। বিজেপির (BJP) অভিযোগ, রাজ্যের মানুষকে ঘরে ঘরে জল দিতে চাইলেও রাজ্য সরকার (State Government) তা সেভাবে হতে দিচ্ছে না। পালটা তৃণমূলও প্রচারে জানিয়ে দিচ্ছে, কেন্দ্রের অনেক আগেই তারা জল পৌঁছে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এই ইস্যুতে ভোটের জল কোথায় গড়ায়, সেটাই এখন দুই পক্ষেরই চিন্তার কারণ।
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে প্রতিটি ঘরে জল সরবরাহের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার ২০২০ সালের জুলাই মাসে জলস্বপ্ন প্রকল্প চালু করেছে। পুরুলিয়ায়(Purulia) প্রথম পর্বের কাজও শুরু হয়েছে জাইকার আর্থিক সহায়তায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে। এই কাজ শেষ হলে পুরুলিয়ার পাঁচটি ব্লকের ৬.২৩ লক্ষ মানুষ এবং পুরুলিয়া পুর এলাকার ১.৮৫ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। পাশাপাশি এডিবির আর্থিক সহায়তায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আরও তিনটি পানীয় জল প্রকল্প শুরু হতে চলেছে।
বাঁকুড়া জেলার চারটি ব্লকে পানীয় জল প্রকল্পে মেজিয়া, গঙ্গাজলঘাঁটি, ইঁদপুর এবং তালডাংরা-২-এর ১১.০৩ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। হাড়োয়া, রাজারহাট, ভাঙড়-২ ব্লকের আর্সেনিক দূষিত এলাকার ৫.২৬ লক্ষ মানুষকে পানীয় জল দিতে ভূতল জলপ্রকল্প এবং নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম এক ও দুই নম্বর ব্লকের নোনা অঞ্চলের ৭.৮২ লক্ষ জল সমস্যার সুরাহায় একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের আমফান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ৩৮০০টি নতুন টিউবওয়েল বসানো হয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ, ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার জল জীবন মিশন প্রকল্প শুরু করেছে। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই প্রকল্পের কাজে গুরুত্ব দিচ্ছে না। পানীয় জল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রাজ্যের মানুষ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi) রাজ্যের প্রচারে এসেও সেই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। বিজেপির দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে ১৭০০ কোটি টাকা দিয়েছে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের এই প্রকল্পের জন্য। যার মাধ্যমে রাজ্যে প্রায় ১.৭৫ কোটি গ্রামীণ পরিবারে পানীয় জল পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্য সরকার মাত্র ৬০৯ কোটি টাকা খরচ করেছে। বাকি টাকা কোথায় গিয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
রাজ্যের ঘরে ঘরে জল পৌঁছে দেওয়া নিয়ে তাই এখন দু’পক্ষই সরব। জলের ধারা কোনদিকে বয়, সেটার উত্তর মিলবে ভোটের ফলের দিনই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.