Advertisement
Advertisement

Breaking News

WB Assembly Polls 2021

বিস্বাদ তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেল! জামানত জব্দ মীনাক্ষী-ঐশী থেকে অশোক-মান্নানদের

দেখে নিন কারা অল্পের জন্য় মান বাঁচালেন।

WB Assembly Polls 2021: More then hundred Left candidates lost their deposites in election | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:May 3, 2021 9:29 pm
  • Updated:May 6, 2021 9:52 am  

পারমিতা পাল: জনসমর্থনের জোয়ার আনতে খোলনলচে বদলেছিল বাম। সময়ের চাহিদা মেনে টিকিট দেওয়া হয়েছিল বহু নতুন মুখকে। জোর দেওয়া হয়েছিল তারুণ্যে। বদল এসেছিল প্রচারের ধরণধারনেও। কিন্তু ভোটবাক্সে তার প্রভাব পড়ল না। বরং আরও অন্ধকারে তলিয়ে গেল বাম ও কংগ্রেস। জয় পাওয়া তো দূরে থাক। জামানত বাজেয়াপ্ত হল একাধিক তরুণ নেতার। বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ বাম-কংগ্রেস নেতারও জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। মোটের উপর সংযুক্ত মোর্চার শতাধিক প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

নির্বাচনী বিধি বলে, কোনও কেন্দ্রে পড়া মোট ভোটের এক ষষ্ঠাংশ (১৬.৪ শতাংশ) প্রার্থী না পেলে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। অর্থাৎ জমা রাখা টাকা বাজেয়াপ্ত করে কমিশন। এবার বহু বাম-কংগ্রেস প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছে। বহু তরুণ মুখের ঝুলিতেও ১৬ শতাংশ ভোটও জোটেনি।

Advertisement

[আরও পড়ুন : করোনার জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গেল সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরের ভোট]

সকলের এবার নজর ছিল নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে। নতুন মুখ মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রেখেছিল দল। মমতা-শুভেন্দু দুই হেভিওয়েটের লড়াইয়ের মাঝেও নজর কেড়েছিলেন এই বামপ্রার্থী। রাজ্যের প্রচারেও তাঁর চাহিদা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু ভোটবাক্স তাঁকে নিরাশই করল। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৬ হাজারের কিছু বেশি। শতাংশের হিসেবে মাত্র ২.৭৪। একা শুধু মীনাক্ষী নয়, মুখ থুবড়ে পড়েছেন সিঙ্গুরে সৃজন ভট্টাচার্য (১৪.৩%), খড়দহের দেবজ্যোতি দাস(১৪.৭০%), জামুড়িয়ার ঐশী ঘোষ(১৪.৮৯%), কল্যাণীর সবুজ দাস(১০.০৬%), রাজারহাট-নিউটাউনের সপ্তর্ষি দেবরা(১৩.৪৩%)। সম্মানজনক লড়াই তো দূরে থাক প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে নিজ নিজ কেন্দ্রে তৃতীয় হয়েছেন তাঁরা।

এই তালিকায় রয়েছেন শিলিগুড়ির অবিসংবাদী নেতা অশোক ভট্টাচার্যও। তাঁর প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার ১৬.১৪ শতাংশ। তথৈবচ অবস্থা রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানেরও। চাপদাঁনি কেন্দ্রে তাঁর প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার ১১.৫৭ শতাংশ। এই আঁধারে সামান্য আলোর দিশা দেখিয়েছেন প্রতীক ঊর, সায়নদীপ, দীপ্সিতারা। ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে লড়াই করা প্রতীক ঊর রহমানের প্রাপ্ত ভোটের হার ১৭.১৮ শতাংশ। কামারহাটির সায়নদীপ পেয়েছেন ১৯.৬২ শতাংশ, বালি থেকে লড়াই করে দিপ্সীতা ধরের ঝুলিতে এসেছে ১৭.৫১ শতাংশ ভোট। কসবায় পরাজিত শতরূপ ঘোষ পেয়েছেন ১৭.৫৬ শতাংশ ভোট। মান বাঁচিয়েছেন যাদবপুরের সুজন চক্রবর্তী। তৃতীয় স্থানে লড়াই শেষ করেও তাঁর প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার ২৭।

[আরও পড়ুন : ভোট মিটলেও অব্যাহত রাজনৈতিক সংঘর্ষ, বর্ধমান ও নদিয়ায় মৃত ৪]

একসময় ইংল্যান্ডের ক্রিকেট সমালোচক নেভিল কার্ডাস স্কোরবোর্ডকে গাধা বলেছিলেন। কথাটা যেন বর্তমানে ভীষণই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। ভোটের খাতায় একুশের মহারণের ফলাফল লেখা থাকবে। জ্বলজ্বল করবে মীনাক্ষী-ঐশী-দিপ্সীতা-সায়নদীপ-সৃজন-শতরূপদের ব্যর্থতা। কিন্তু কেউ বলবে না তাঁদের প্রতিদিনের লড়াইয়ের কথা। যুযুধান দুই কঠিন প্রতিপক্ষের মাঝে দাঁড়িয়েও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াইয়ের কথাও অনেকেই হয়তো ভুলে যাবেন সময়ের স্রোতে। তাঁদের বিচার হবে শুধু ফলাফল দিয়ে। তাই ভোটযুদ্ধ শেষে বামেদের নতুন প্রজন্মের হাতে থাকল পেনসিল। অধিকাংশ প্রার্থীর ঝুলিতে এল ১৬ শতাংশেরও কম ভোট। জামানত জব্দ হল তাঁদের। ৩৪ বছর বাংলার শাসক আসনে থাকা দলটিকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলেরও মর্যাদা দিল না রাজ্যবাসী। কার্যত রাজ্যের রাজনীতি থেকে মুছে যাওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল দলটি! সময়ের চাহিদা মেনে দলীয় নেতৃত্ব তারুণ্যে ভরসা রাখলেও বামেদের মরা গাঙে জোয়ার কিন্তু শেষপর্যন্ত এল না। তথৈবচ অবস্থা বামেদের জোটসঙ্গী কংগ্রেসেরও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement