দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: আব্বাস সিদ্দিকির সভায় যাওয়ায় এক আইএসএফ (ISF) কর্মীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল (TMC) কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্বের পালটা দাবি, পারিবারিক বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।
ভাঙড়ের (Bhangar) বোদরা অঞ্চলের সাপা গ্রামের বাসিন্দা আব্বাস অনুগামী অজিত মোল্লার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার বিকালে ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারে আব্বাস সিদ্দিকির সভা ছিল। সেই সভাতেই গিয়েছিলেন অজিত মোল্লা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ওই সভায় যাওয়ার ‘অপরাধে’ রাতেই তৃণমূল কর্মীরা বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় হয় বলে অভিযোগ। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে তাঁর বাড়ি। প্রতিবেশীরা দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও পুড়ে ছাই হয়ে যায় বাড়িটি। ঘটনার খবর পেয়ে ভাঙড় থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও অভিযোগ, ভাঙড় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যাওয়ার সময় অজিত মোল্লার উপর আবার হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। থানায় অভিযোগ না করার হুমকিও দেওয়া হয় বলে দাবি। পরে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে নলমুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি করেন। পরে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। গোটা ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। এই ঘটনায় ভাঙড় থানার পুলিশের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দুজনকে গ্রেপ্তার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ভাঙড় ব্লকের আইএসএফ সভাপতি শরিফুল ইসলাম। তাঁর কথায়, আব্বাসের সভায় যোগ দেওয়ার অনুমগামীর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শাজাহান মোল্লা জানিয়েছেন, পারিবারিক বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।
উল্লেখ্য, ভোটে বাঁধা দিতে আসলে তৃণমূল কর্মীদের বেঁধে রাখার নিদান দিয়েছিলেন আইএসএফ-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। ভাঙড় বিধানসভার সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী আইএসএফ চেয়ারম্যান নওসাদ সিদ্দিকির সমর্থনে ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজারে জনসভা ছিল রবিবার। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন খোদ বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। দুই হেভিওয়েট বক্তার বক্তব্য শোনার জন্য ভাঙড়ের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মিছিল সহকারে সভাস্থলে আসেন আইএসএফ-এর কর্মী সমর্থকরা। পুলিশকে হুশিয়ারি দেন আব্বাস। এদিন আব্বাস হুশিয়ারি দিয়ে বলেন,”ভাঙড়ে কোনও যুবকের কিছু হলে রাস্তা অবরোধ করা হবে। থানা ঘেরাও করা হবে।” এর পাশাপাশি তিনি উপস্থিত কর্মী সমর্থক দের বলেন, “কেউ ভোটে বাঁধা দিতে আসলে তাঁকে বেঁধে রাখবেন। ভোট শেষ হলে ছেড়ে দেবেন।” সেই সভায় যোগ দেওয়ার অপরাধেই বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হল অজিত মোল্লার। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.