রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: চরকি পাক খাচ্ছেন তিনি। এতদিন হেঁশেল সামলাতেন। এখন তাঁর হাতে পতাকা। ভোট বড় বালাই। স্বামী প্রার্থী। কিন্তু তিনি আপাতত নিভৃতবাসে রয়েছেন। তাই স্বামীর হয়ে দিনরাত প্রচারে স্ত্রী। করিমপুরের বিজেপি (BJP) প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ করোনা আক্রান্ত। সেই কারণে গৃহবন্দি হয়ে আছেন তিনি। ভোটের বাকি হাতে গোনা কয়েক দিন, এই সময় প্রচারে ঘাটতি থাকলে তার ফায়দা তুলতে ভোট ময়দানে নেমে পড়বেন অন্যান্য দলের নেতা, কর্মীরা। সেই কারণে স্বামীর হয়ে প্রচারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন কাকলীদেবী। কাঠফাটা রৌদ্রেও হার না মানা জেদ নিয়ে বিধানসভার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত কর্মীদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার মুরুটিয়ার বালিয়াডাঙা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রাজনাথের সভার মঞ্চে ওঠার আগে র্যাপিড টেস্টে করিমপুরের বিজেপি প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথবাবুর করোনা (Coronavirus) রিপোর্ট পজিটিভ আসে। মঙ্গলবার প্রার্থীর সমর্থনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বালিয়াডাঙা মাঠে ভাষণ দিতে এসেছিলেন। মঞ্চে ওঠার আগে অন্যান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে করিমপুর বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথ ঘোষের র্যাপিড টেস্ট করা হয়। সেখানে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। যে কারণে তিনি রাজনাথ সিংয়ের সভামঞ্চে আর ওঠেননি। মঞ্চের পিছনের ঘরে তিনি রাজনাথ চলে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে একা বসে ছিলেন। যদিও করোনা টেস্ট করানোর আগে বিজেপি প্রার্থী দলীয় কর্মী, সমর্থকদের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন। ঘটনার পর দলের তরফ থেকে তাঁদেরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
বিজেপি প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ জানান, “সব কিছু ঠিকই ছিল। ওই দিন মঞ্চে ওঠার আগে নিয়মমাফিক র্যাপিড টেস্টে আমার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তবে সেই দিন আমার সঙ্গে যে পাঁচ জন ছিলেন, তাঁদের কিন্তু নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছিল। বর্তমানে করোনাবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিশেষ প্রয়োজনে কর্মীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা, বৈঠক করছি।” তিনি আরও জানান, “ভোটের চরম মুহূর্তে প্রচারের কাজে বেশ সমস্যায় পড়ে গেলাম। পিপিই পরে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভোটের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।”
সমরবাবুর স্ত্রী কাকলি ঘোষ বলেন, “আমরা বিজেপি পরিবারের সদস্য। ভোট প্রচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে আমার স্বামী করোনা আক্রান্ত, সেই কারণে তিনি গৃহবন্দি হয়ে আছেন। তাঁর হয়ে আমি জনতার দরবারে ঘুরছি। ভোটাররা তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা বলছেন, আমি তাঁদের কথা শুনে তাদের অভাব-অভিযোগ খাতায় নথিভুক্ত করছি। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করছি।” কিন্তু কোনওদিন সরাসরি সেভাবে রাজনীতির ময়দানে তো নামেননি। অসুবিধা হচ্ছে না? দল রয়েছে সঙ্গে, কর্মীরাও রয়েছেন। তাই সমস্যা নেই বলেই জানাচ্ছেন কাকলিদেবী। অনেকে আবার তাঁর সঙ্গে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ’র তুলছেন। তিনি প্রশাসনের নির্দেশে এলাকায় ঢুকতে পারছিলেন না। তখন তাঁর হয়ে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে এনে রাজ্যের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.