দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: করোনা (COVID-19) পরিস্থিতির মধ্যেই বাংলা-সহ মোট পাঁচটি রাজ্যে চলছে ভোট পর্ব। কিন্তু সুন্দরবন এলাকায় এই প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী প্রয়োগ করলেন তাঁর ভোটাধিকার। গোসাবা ব্লকের মতো একটি নদীমাতৃক বিধানসভাতে একপ্রকার অসাধ্যসাধন করলেন গোসাবা ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক। যা আগামিদিনে কোভিড আক্রান্ত রোগীর কাছে এক অনন্য নজির হয়ে থাকবে।
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় গোসাবা বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের (WB assembly election) আগেই করোনা পরীক্ষায় দেখা যায় গোসাবা ব্লকের তিনজন মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত। যাঁদের মধ্যে একজন ভোট না দিয়ে কোভিড সংক্রমণ নিয়েই চলে গিয়েছেন রাজস্থানে কাজে। অন্য দু’জন একই এলাকায় হওয়ায় তাঁদের ভোটদানের ব্যবস্থা করে প্রশাসন। শাহিনুর সর্দার নামে ওই করোনা আক্রান্ত রোগী প্রথম প্রয়োগ করেন তাঁর নিজস্ব গণতান্ত্রিক আধিকার। পিপিই পরে তিনি আসেন বুথে। সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। রাধানগর তারানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৬ নং বুথে এসে তিনি ভোট দেন।
নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী, যদি কোনও ভোটার কোভিড পজিটিভ অবস্থায় ভোট দিতে চান, তার ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে। সেই মতো বাড়ি থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে ভোট কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয় ওই কোভিড রোগীকে। সেখানে নির্বিঘ্নেই ভোট দেন তিনি। স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে ভোটের পর ওই এলাকাটি স্যানিটাইজার দেওয়া হয়। এ বিষয়ে গোসাবার বিএমওএইচ ইন্দ্রনীল বর্গী বলেন, “করোনা রোগীকে ভোটদানে উৎসাহিত করা হলে আগামিদিনে অন্য আক্রান্তরাও বুথে আসবেন। তার জন্যই এগিয়ে আসতে হবে আমাদের। স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মী এবং প্রশাসনকে।”
সুন্দরবনের মতো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ, যেখানে একটা দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে পৌঁছাতে হয় নদীর খেয়া পারাপার করে। সেখানে এই রোগের জন্য আলাদা করে ব্যবস্থা করা হয়েছে অ্যাম্বুল্যান্সের। তাছাড়াও প্রত্যেকটা দ্বীপের একটি করে মোবাইল ইউনিটের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ব্যবস্থা ছিল ৩১টি মেডিক্যাল টিমেরও। ভোট শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন মেনে ভোট দিলেন এই করোনা রোগী। সুন্দরবনে ভোটের ইতিহাসে যা এক অনন্য নজির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.