রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: চুঁচুড়ার স্কুলের নুন-ভাত কাণ্ডের রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের শুকনো বিস্কুট দেওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর ব্লকের জামনা গ্রামে। জানা গিয়েছে, জামনা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র টিউবওয়েলটি বিকল হয়ে গিয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। ফলে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ স্কুলের মিড ডে মিলের রান্না। অভিযোগ, স্কুলে গিয়ে ভাতের বদলে বিস্কুট খেয়েই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে কচিকাঁচাদের।
অভিভাবকদের প্রশ্ন, স্কুলের টিউবওয়েল খারাপ হলেও কাছাকাছি এলাকা থেকে জলের ব্যবস্থা করে কেন রান্না করা হচ্ছে না? যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও সমস্যা তৈরি হওয়ায় মিড ডে মিল বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শেখ ইনামুল হক বলেন, “কল বিকল হওয়ায় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। মিড ডে মিল মাত্র সাতদিন ধরে বন্ধ। ইতিমধ্যেই কল খারাপ হওয়ার বিষয়টি আমরা পঞ্চায়েতে জানিয়েছি। সোমবার কল মেরামতের লোক এসে কাজও শুরু করেছিল। কিন্তু তাঁরা জানিয়েছেন, কলের পাইপ বদলানোর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই কল সারানো যায়নি।”
সহদেব রায় নামে এক অভিভাবক বলেন, “আমার মেয়েরা গত কুড়ি দিন নিয়মিত স্কুলে এসেছে। কিন্তু খাবার পায়নি। ওদের বিস্কুট দিয়েই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি পানীয় জলও পাচ্ছে না। বিষয়টি পঞ্চায়েতে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” দুই পড়ুয়া জানায়, স্কুলের শিক্ষকরা তাঁদের প্রতিদিন দু’দফায় বিস্কুট দিচ্ছেন। ভাত দিচ্ছে না।” জামনা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুস্মিতা মল্লিক বলেন, “কল খারাপ হওয়ায় মিস্ত্রি পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা বাইরে থেকে নতুন যন্ত্রাংশ আনতে বলেছেন। সেই কাজ চলছে। তবে, রান্না বন্ধ রয়েছে বিষয়টি আগে আমায় কেউ জানায়নি।” তাঁর কথায়, মঙ্গলবারই কয়েকজন তাঁর বাড়িতে গিয়ে জানান যে মিড ডে মিলের রান্না বন্ধ।
গোটা ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষকেই কাঠগড়ায় তুলছেন পঞ্চায়েত প্রধান। তাঁর কথায়, বাড়িতে কল খারাপ হলে তো রান্না বন্ধ থাকে না। শিক্ষকরা জলের ব্যবস্থা করতে পারতেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মন্তেশ্বরের বিডিও বিপ্লব দত্ত বলেন, “পঞ্চায়েতকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, মিডডে মিল যে বন্ধ রয়েছে স্কুল থেকে সেই রির্পোট দেওয়া হয়নি। আশেপাশে লোকালয় থেকে জল নিয়ে কেন মিড ডে মিল চালানো গেল না সেই কারণও জিজ্ঞেস করা হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। এবিষয়ে কালনা মহকুমা শাসক নীতেশ ঢালি বলেন, “আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.