ছবি: সুনীতা সিং
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কথিত আছে রাম–সীতা বনবাসে থাকার সময় তাঁরা পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে ছিলেন! ছোটনাগপুর মালভূমির এই অযোধ্যার জনপদ জুড়ে এমন বহু টুকরো–টুকরো কল্পকাহিনী আজও লোকমুখে শোনা যায়। তাই অযোধ্যা পাহাড় থেকে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমি পুজোয় তিন কলসে করে মাটি পাঠাল স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। ঝাড়খণ্ডের রাঁচি হয়ে সেই মাটি মঙ্গলবার অযোধ্যায় পৌঁছবে।
গত শনিবার বাঘমুন্ডি বিধানসভা বিজেপি নেতৃত্ব অযোধ্যা হিলটপের রাম মন্দির, সীতাকুন্ড ও বাঘমুন্ডির লহরিয়ার রাম মন্দির থেকে তিনটি কলসে করে মাটি নেয়। পুরুলিয়া জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিবেক রাঙ্গা বলেন, “তিনটি কলস পূর্ণ করে অযোধ্যা পাহাড় থেকে রাঁচি হয়ে অযোধ্যার রাম মন্দিরের ভূমি পুজোয় মাটি পাঠানো হয়েছে। এই কাজে এই পাহাড়ের মানুষের রাম মন্দিরকে ঘিরে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে।” ৫ আগস্ট ভূমিপুজোর দিন অযোধ্যা পাহাড়ের রাম মন্দিরে দিনভর অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন বাঘমুন্ডির বিজেপির কার্যকর্তারা। সেখানে পুজো পাঠ, ভোজন ছাড়াও ভূমিপুজোর অনুষ্ঠানের লাইভ দেখানো হবে। এছাড়া ওই দিন ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বালানোর কর্মসূচিতে শহর পুরুলিয়ায় বুধবার পঞ্চাশ হাজার দীপ বিলি করবে জেলা বিজেপি।
বাংলার পর্যটনস্থল অযোধ্যা পাহাড় দেশের পর্যটন মানচিত্রেও জায়গা করে নিয়েছে। তাই এখন এই পাহাড়ে বিদেশিরাও পা রাখেন। কিন্তু রাম–সীতা বনবাসকালে এই পাহাড়ে ছিলেন এই জনশ্রুতি নিয়ে নানান বিতর্ক রয়েছে। তবে সেই বিতর্কের মধ্যেই অযোধ্যা পাহাড় থেকে রাম মন্দিরের ভূমি পুজোয় মাটি নিয়ে যান বিজেপির কার্যকর্তারা। পুরুলিয়া জেলা বিজেপির আরেক সাধারণ সম্পাদক তথা বাঘমুন্ডি বিধানসভার আহ্বায়ক শংকর মাহাতো বলেন, “কথিত আছে, রাম–সীতা বনবাসে থাকার সময় এই পাহাড়ে ছিলেন। সেই সময় সীতাদেবী তৃষ্ণার্ত হওয়ায় ওই অযোধ্যা ভূমে তির নিক্ষেপ করে জল বার করেন।
সেই জল পান করেন সীতাদেবী। তাই পাহাড়ের ওই এলাকার নাম সীতাকুন্ড। তাই আমরা সেখান থেকেও মাটি নিই।” বাঘমুন্ডি–অযোধ্যা পাহাড়ের বিজেপি নেতাদের কথায়, জনশ্রুতি আজ বিশ্বাস হয়ে গিয়েছে। তাই এখনও শোনা যায় অযোধ্যা পাহাড়ে নাকি সীতার চুল মেলে! তবে এই সীতাকুন্ডকে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের আওতায় থাকা সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ তাদের পর্যটন প্রচারপত্রে “অটোফ্লো স্পেশালি ফর স্টুডেন্টস অফ এনথ্রোপলজি’ বলে চিহ্নিত করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.