সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বোলপুরের সভা থেকে সরাসরি বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে নিশানা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি তাঁকে ‘বিজেপির মার্কামারা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। মঙ্গলবারই এই কটাক্ষের জবাব দিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
এদিন সন্ধেয় একাধিকা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। সেখানেই তিনি একাধিক বিতর্কিত বিষয় নিয়ে জবাব দেন। সেখানে যেমন উঠে এসেছে অর্মত্য সেনের জমি বিতর্ক থেকে অমিত শাহের আসনের কথা, তেমনই উঠেছে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ থেকে তাঁকে কটাক্ষের কথাও।
রাজ্যের সঙ্গে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছে। একাধিক ইস্যুতে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। এমন আবহে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চান না বলে বিতর্ক এড়িয়েছেন উপাচার্য। তবে হাবেভাবে তিনি বুঝিয়েছেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। অর্মত্য সেনের প্রতীচী জমি বিতর্ক নিয়ে তিনি জানান, “বিশ্বভারতীর ৭৭ একর জমি বেদখল হয়েছে। তা নিয়ে অডিটের রিপোর্টে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের নাম রয়েছে। তবে এখনই কোনও কঠোর পদক্ষেপের কথা ভাবা হয়নি। ভুলভাবে সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে।”
অভিযোগ উঠেছিল, রবি ঠাকুর যে চেয়্যারে বসতেন সেই আসনে অমিত শাহকে বসতে দিয়েছেন বিদ্যুৎবাবু। অভিযোগ খারিজ করে তাঁর জবাব, “ওই জায়গায় ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, প্রণববাবু, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বসেছেন। আর অমিত শাহ এখানে কোনও দলের প্রতিনিধি হয়ে নয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন। তাই তাঁকে অ্যাপায়ন করা হয়েছে।”
শতবর্ষের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ না করারও অভিযোগ উঠছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগও সম্পূর্ণ মিথ্যে বলে দাবি করেন তিনি। বিদ্যুৎবাবুর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আপ্তসহায়ককে আমি চিঠি দিয়েছিলাম। এমনকী, তিনি যখন বোলপুরে এসেছিলেন তখনও দেখা করার সময় চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও চিঠিরই জবাব পাইনি।” এদিন বিশ্বভারতীয় উপাচার্যর আফশোস, “বিশ্বভারতীর নাম আমি বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল করতে চাইছি। কিন্তু অনেকেই সেটা হতে দিতে চাইছেন না”
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে এবার তৃণমূলের দলীয় পতাকা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এর আগে বিশ্বভারতীর ভিতরে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা, ব্যানার দেখা যায়নি। এই ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছেন ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর । তিনি বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলের বিশ্বভারতীর মধ্যে প্রবেশ করার কথা নয়। এটা একসময় আমরা মেনে চলতাম । কিন্তু এখন সবই হচ্ছে। হয় তৃণমূল নয় বিজেপি। রাজনাতি চলছে । এটা হওয়া উচিত না। কিন্তু হচ্ছে। আমার আর কী করার আছে।” বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে পুলিশে অভিযোগ করেছে বলে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.