ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: সর্বভারতীয় স্তরে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দেওয়া র্যাঙ্কিংয়ে একধাক্কায় ২০ ধাপ নেমে গিয়েছে ঐতিহ্যবাহী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে যেখানে ১১ নম্বরে ছিল, সেখানে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে তালিকায় নেমে এসেছে ৩১ নম্বরে। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক থেকে আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীরা।
[‘কবীর’-এর প্রচারে আসরে এসটিএফ! ব্যাপারটা কী?]
অভিযোগ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের চূড়ান্ত উদাসীনতার পাশাপাশি বিশ্বভারতীর পরম্পরা কলা এবং সংগীতকে গুরত্ব না দিয়ে বিজ্ঞানকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার জন্যেই পরিস্থিতি। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, “গত দুটি বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঠিক তথ্য মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে পাঠানো হয়নি। একই ভাবে যে বিষয়গুলি গুরত্ব দেওয়া উচিত ছিল তা করা হয়নি। এবার প্রথম থেকেই একাধিক বিষয়ে মানোন্নয়নে গুরত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০১৮-১৯ বিশ্বভারতীর র্যাঙ্কিং অনেকটাই বাড়বে।” বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়কে র্যাঙ্কিং দেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে গুরত্ব দেওয়া হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল পঠনপাঠন, গবেষণা, সমাজের সর্বস্তরে পড়ুয়াদের অংশগ্রহণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে সাধারণ মানুষের ধারনা। পাশাপাশি, পড়ুয়ারা পাস করে বেড়িয়ে কী করছেন তার উপরও র্যাঙ্কিং নির্ভর করে।
অভিযোগ, সুশান্ত দত্তগুপ্ত উপাচার্য থাকার সময় বিশ্বভারতীর অবক্ষয় শুরু হয়। কিন্তু প্রশাসক হিসাবে সুশান্ত কঠোর থাকায় বিশ্বভারতীতে পঠনপাঠন, গবেষণা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ এই বিষয়গুলিতে এগিয়ে থাকার সূত্রে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে সর্বভারতীয় স্তরে বিশ্বভারতীর র্যাঙ্কিং ছিল ১১। কিন্তু সুশান্ত বাবুর নিয়োগ, আর্থিক সংক্রান্ত একাধিক দুর্নীতি সামনে আসতেই বিশ্বভারতীর সার্বিক ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলে। একই ভাবে বিশ্বভারতীতে ঐতিহ্যগত বিষয়গুলি বিশেষ করে কলাভবন, সংগীতভবন, বিদ্যাভবনগুলির মানোন্নয়ন না করে বিজ্ঞান বিষয়ের উপর বেশি জোর দেওয়া হয়। কিন্তু সর্বভারতীয় স্তরে একধিক বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যাদের পরিকাঠামো বিশ্বস্তরের। তাই তাদের সঙ্গে প্রতিযোগীতা করা প্রায় অসম্ভব। একইভাবে কলাভবন, সংগীতভবনের মানোন্নয়ন না করার জন্য বিদেশ থেকে বিশ্বভারতীতে পড়তে আসা ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা কমে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্বপন দত্ত যে ভাবে গত দুবছর অপরিকল্পিতভাবে বিশ্বভারতী চালিয়েছেন তাতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ।
এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক এবং বিখ্যাত শিল্পী যোগেন চৌধুরি বলেন, “বিশ্বভারতীতে যেভাবে একের পর এক দুর্নীতি হয়েছে তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে কলা এবং সংগীতের উপর জোর না দিয়ে বিজ্ঞানের উপর জোর দেওয়ায় প্রভাব পড়েছে র্যাঙ্কিং এ।” এই বিষয়ে ভিবিউফার সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “গত দুবছর যেভাবে বিশ্বভারতীকে পরিচালনা করা হয়েছে তার প্রভাব পড়েছে এই র্যাঙ্কিংয়ে।”
[এই প্রযুক্তিতেই মায়ের দেহ সতেজ রেখেছিলেন শুভব্রত]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.