Advertisement
Advertisement

Breaking News

Kaali row

কালীপুজো নিয়ে কেন আলোচনাসভা? কালী-বিতর্কে ‘ইন্ধন’ দিয়ে প্রশ্নের মুখে বিশ্বভারতী

কালীপুজো নিয়ে আলোচনাসভা আয়োজনের পিছনে রাজনীতি দেখছেন আশ্রমিকরা।

Visva Bharati University in Kaali row | Sangbad Pratidin

ফাইল ছবি

Published by: Sulaya Singha
  • Posted:July 23, 2022 10:32 am
  • Updated:July 23, 2022 10:33 am  

ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ‘মা কালী’ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই চাপানউতোর চলছে রাজ্যে। তারই মধ্যে আশ্রম প্রাঙ্গণে কালীপুজো নিয়ে আলোচনাসভা ডেকে বিতর্কে নয়া ইন্ধন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। প্রথম দিন থেকে যে শিক্ষাঙ্গনে ব্রাহ্ম ধর্মমতের চর্চা, মূর্তিপুজো বা দেবী আরাধনা থেকে যে প্রতিষ্ঠান শত হস্ত দূরে, সেখানে হঠাৎ এহেন বক্তৃতামালার আয়োজন কেন, সেই প্রশ্ন প্রাক্তনী, আশ্রমিকদের।

আগামী ২৫ জুলাই ‘কালীপুজোর ধারণা’ শীর্ষক এক বক্তৃতাসভার আয়োজন করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এই সভার প্রধান বক্তা কলকাতার শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম, আলমবাজার মঠের সাধারণ সম্পাদক সারদাত্মানন্দ মহারাজ। অনুষ্ঠানের সভাপতি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। কালী উপাসনা নিয়ে ভাষণও দেবেন তিনি।

Advertisement

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর নির্জন প্রকৃতি মাঝে নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনার জন্য শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে গুরুদেব স্থাপিত বিশ্বভারতীতেও সেই রীতি বজায় থেকেছে। আজও সপ্তাহের প্রতি বুধবার ও বিশেষ দিনগুলিতে শান্তিনিকেতনের (Shantiketan) উপাসনা গৃহে ব্রহ্ম উপাসনা হয়। কোনও দেবদেবীর আরাধনা বা মূর্তিপুজো হয় না। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কালীপুজোর রীতি নিয়ে আলোচনাসভা আয়োজনকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। কর্তৃপক্ষের তরফে আলোচনা সভার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে আশ্রমিক থেকে প্রাক্তনী ও অধ্যাপক মহলে। সমালোচনার সব তিরের অভিমুখ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “বিশ্বভারতীর (Visva Bharati University) প্রতিষ্ঠা থেকে এখানে কোনও ধর্মালোচনা বা পুজো হয় না। ব্রহ্ম বা এক ঈশ্বরের প্রার্থনা করা হয়। কিন্তু এখন যাঁরা আছেন, তাঁরা বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য ধ্বংস করতে চাইছেন। রাজনীতি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।” একই সুরে মুখর আশ্রমিক, পড়ুয়া থেকে রবীন্দ্র অনুরাগীরা। উপাচার্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন আছড়ে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রশ্ন তোলা হয়েছে, বিশ্বভারতীর মতো একটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কহীন এই সভা কেন? যা প্রতিষ্ঠানের চরিত্র বিরোধী!

[আরও পড়ুন: রাতভর জেরার পর নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার পার্থ চট্টোপাধ্যায়]

অতি সম্প্রতি তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের ‘মা কালী’ (Kaali Poster Row) সংক্রান্ত এক মন্তব্যে প্রবল রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যার রেশ মেটেনি এখনও। সাংসদের ওই মন্তব্যের পর ‘মা কালী’ নিয়ে একাধিকবার মন্তব্য শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-সহ বিজেপির সর্বোচ্চ নেতৃত্বের মুখে। তারই মধ্যে উপাচার্যের এই কালীপুজো নিয়ে আলোচনাসভা আয়োজনের পিছনে রাজনীতি দেখছেন আশ্রমিকরা। আগেও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আয়োজিত একাধিক সেমিনার নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল বিশ্বভারতীতে। যা নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিল পড়ুয়ারা। বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। উপাচার্যের বিরুদ্ধে ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠতা’-র অভিযোগও উঠেছে। যদিও এ প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় এক লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজের বক্তৃতার মাধ্যমে ধর্মীয়, বিদ্যাচর্চাগত এবং বৌদ্ধিক আলোচনা ও উপলব্ধির প্রয়াস।’

তার পরও অবশ্য প্রতিবাদের সুর শোনা গিয়েছে বিভিন্ন মহলে। বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী নুরুল হক বলেন, “ছাত্রজীবনে আমরা বিশ্বভারতীতে কোন ধর্ম নিয়ে আলোচনা শুনিনি। এখন যা যচ্ছে তা বিশ্বভারতীর সংস্কৃতি বিরোধী।” বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফার সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “এখন যা হচ্ছে তা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ট্রাস্ট ডিডের লঙ্ঘন। কোনদিন দেখব, উপাচার্য মাথার খুলি নিয়ে মন্দিরে তান্ত্রিক মতে পুজো করছেন। অধ্যাপকরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement