নন্দন দত্ত, বীরভূম: সম্প্রীতির নজির বিশ্বভারতীতে (Visva Bharati)। শতাব্দী প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই প্রথমবার পালিত হল ইদ (Eid-ul-fitr)। বিশেষ দিনে অনুষ্ঠিত হল বিশেষ প্রার্থনাও। তবে এই বিশেষ অনুষ্ঠানও বিতর্কহীন রইল না। ফের উপাসনা মন্দিরে বসে ‘কুকথা’ বলার অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্য়ুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। উপাসনা গৃহে বসেই উপাচার্যের অভিযোগ, “বিশ্বভারতীতে যা কিছু সমস্যা হচ্ছে সবকিছুতেই সম্প্রীতির অভাব রয়েছে। আমি বললেই ভুল, আর বিখ্যাত পরিবারের কোনও সদস্য যদি ভুল বলেন বা ভুল কিছু করেন, সেটিকে সবাই ঠিক বলে।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “বিশ্বভারতী ইতিহাসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছে। এখানে খ্রিস্ট উৎসবে বিশেষ মন্দির হত। এবার থেকে ইদেও হবে।”
শনিবার সন্ধেয় ইদ উপলক্ষেই শান্তিনিকেতনের উপাসনা মন্দিরে পালিত হয় বিশেষ ‘মন্দির’। সেই কাঁচঘরে উপাসনার পর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন,”বিশ্বভারতীতে খ্রিস্ট উৎসবে মন্দির হয়। ইদ নিয়ে কোনওদিনই বিশ্বভারতীতে মন্দির হত না। গত বছর আমরা আলোকসজ্জা করেছিলাম। এ বছর থেকে উপাসনা মন্দিরেও বিশেষ প্রার্থনা করলাম। বিশ্বভারতী ইতিহাসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছে। এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ইদ পালন করা হচ্ছে বিশ্বভারতীতে।” এরপরই উপাচার্যের খোঁচা,”বিশ্বভারতীতে যা কিছু সমস্যা হচ্ছে সবকিছুতেই সম্প্রীতির অভাব রয়েছে। আমি বললেই ভুল আর বিখ্যাত পরিবারের কোনও সদস্য যদি ভুল বলেন বা ভুল কিছু করেন সেটিকে সবাই ঠিক বলে।” সম্প্রীতি নিয়ে বিদ্য়ুৎ চক্রবর্তীর প্রশ্ন, “যে সম্প্রীতির কথা বলেছেন গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই সম্প্রীতি আজ কোথায়? আগামী প্রজন্মকে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভাবতে হবে।” নাম না করে অমর্ত্য সেনকে আক্রমণ করে উপাচার্যের সংযোজন, “কোনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।”
প্রসঙ্গত,শান্তিনিকেতনের ব্রহ্ম মন্দির বা উপাসনা গৃহ ১৩৫ বছর ধরে ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। ব্রহ্ম উপাসনার জন্যই গড়ে উঠেছিল এই মন্দির। প্রতি বুধবার বিশেষ প্রার্থনা করার ব্যবস্থা রয়েছে। এই উপাসনা গৃহ শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের অধীনস্থ। সেখানে বসে সাধারণত উপাসনা ছাড়াও আশ্রমিক এবং উপাচার্যের সঙ্গে মত বিনিময় হয়। ঐতিহ্যমণ্ডিত ব্রহ্ম উপাসনা গৃহে বসে রাজনৈতিক কথাবার্তা বলেছেন বলে অভিযোগ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। তা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং আশ্রমিকদের একাংশ। উপাচার্যর বিরুদ্ধে সম্প্রতি আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও অভিযোগ করে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। অভিযোগের ভিত্তিতে রিপোর্টও তলব করে প্রধানমন্ত্রী দপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.