নন্দন দত্ত ও ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর ও বীরভূম: পৌষ মেলার মাঠের পাঁচিল ভাঙা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাইল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে আগামিকাল তাঁরা ১২ ঘণ্টা বিলে অনশন করবেন বলেও জানিয়েছেন। এদিকে বিশ্বভারতী নিয়ে জট কাটার কোনও লক্ষ্মণই নেই। মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসককে বিশ্বভারতীয় উপাচার্য ও সংশ্লিষ্ট পক্ষদের নিয়ে বৈঠকে বসতে বলেছিলেন। বুধবার সেই বৈঠক ডাকাও হয়েছিল। কিন্তু তাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাজির থাকবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। ফলে কার্যত সেই বৈঠক ভেস্তেই গেল। এদিকে বিশ্বভারতী কাণ্ড নিয়ে উত্তাল রাজনৈতিক মহলও। বি্শ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্ব দিয়েছে বলে অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল তোলা হচ্ছিল, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই দাবি এবং উপাচার্যের নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করানোর প্রতিবাদে সোমবার কার্যত তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে। স্থানীয় এবং পড়ুয়াদের একাংশ পে লোডার (Pay Loader) নিয়ে গিয়ে নির্মাণকাজ ভেঙে ফেলেন বলে অভিযোগ। এরপর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। উপাচার্যের অভিযোগ, পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তাই পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, পে লোডার এনে পাঁচিল ভাঙার কাজে সোমবার স্থানীয়দের উসকানি দিয়েছিলেন দুবরাজপুরের তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউড়ি। তাঁর নামে পুলিশে অভিযোগও হয়। সেই তালিকায় রয়েছেন বোলপুর পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার ওমর শেখ, সুকান্ত হাজরা, নেতা দেবব্রত সরকার, চন্দন সামন্ত, সুনীল সিং, সুব্রত ভকত, আমিনুল হুদা। এঁদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তিতে পরিকল্পিত ভাঙচুর, লুটপাট, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। এরপরই বৈঠক ডেকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা।
কিন্তু সূত্রের খবর বৈঠকে থাকবেন না বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানেই প্রশাসনের বৈঠকে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রশাসনিক বৈঠকে যে সমস্ত জনপ্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছে, তারা অনেকেই ভাঙচুরের সময় হাজির ছিল। দ্বিতীয়ত, বৈঠক সার্কিট হাউসের বদলে শ্রীনিকেতনের ব্লক অফিসে করা হচ্ছে। তৃতীয়ত, ভাঙচুর ও হেনস্তার প্রতিবাদে বুধবার ১২ ঘণ্টার রিলে অনশনের ডাক দিয়েছে। সূত্রের খবর, মূলত এই তিন কারণেই বৈঠকে থাকবে না বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
এদিকে বিশ্বভারতীতে ভাঙচুর নিয়ে তৃণমূলকে তুলোধোনা করেছেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েক নেতৃত্বে রাজনীতির পীঠস্থান বিধানসভায় ভাঙচুর চলেছে। এটাই তো ওই দলের সংস্কৃতি। শান্তিনিকেতনকে অশান্তিনিকেতন করে দিয়েছে।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উপযুক্ত দাম না দিয়েই জমি নেওয়া হয়েছে। সেখানে কর্ম সংস্থানও হয়নি। “
দেখুন ভিডিও :
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.