দেব গোস্বামী, বোলপুর: ইউনেস্কোর হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়া শান্তিনিকেতনের নামফলকে নেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) নাম। তা নিয়ে সম্প্রতি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে বিঁধেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তাঁর নির্দেশে তৃণমূল সেখানে লাগাতার ধরনা শুরু করেছে। নামফলকে কবিগুরুর নাম ফেরানো নিয়ে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী এ নিয়ে সরব হওয়ার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিশ্বভারতী (Vishva Bharati) কর্তৃপক্ষ মুখ রক্ষার স্বার্থে জানিয়েছিল, ওটা অস্থায়ী ফলক। নাম লেখায় ভুল হয়েছে। কিন্তু তার পর তিনদিন কেটে গেলেও ফেরেনি নাম। তবে এবার তার পালটায় চার পাতার বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন তিনি।
আত্মপক্ষ সমর্থনে নামফলক বিতর্কে জল ঢালতে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। উপাচার্যের (VC) লিখিত বিবৃতিতে নাম না করে তৃণমূল নেতাদের আক্রমণ করা হয়েছে। তাতে যেমন অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) কথা উল্লেখ রয়েছে, তেমনই সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি আলোচিত মহুয়া মৈত্রও উঠে এসেছেন তাঁর আক্রমণের তিরে। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তাঁদের গ্রেপ্তারি, জেলযাত্রা, এমনকী ভিন রাজ্যের কারাগারে বন্দি ‘মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদধন্য’ নেতার কথাও বলেছেন উপাচার্য।
বিশ্বভারতীর রাস্তা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের টানাপোড়েন চলছিল। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) বিরুদ্ধে জমি দখলের যে অভিযোগে সরব হয়েছে বিশ্বভারতী, তাতে মুখ্যমন্ত্রী নোবেলজয়ীর পাশে দাঁড়িয়ে জমির পরচা তাঁর নামে করে দেওয়ায় কিছুটা বিপাকেই পড়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তার পর একাধিক চিঠিতে সেই জমির অন্তর্গত রাস্তা ফেরত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু তাতে সাড়া মেলেনি। এর পর নামফলক বিতর্ককে (Controversy) ইস্যু করে ফের সেই রাস্তার দাবিতেই শান দিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। কটাক্ষের সুরে তাঁর বক্তব্য, ”আপনার অনেক নেতাই নানা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। হেভিওয়েট কেউ কেউ ধরা পড়ে জেলে রয়েছেন। আপনি কান দিয়ে শুনলে তাঁদের পাশে থাকার কথাই মনে হবে, আমার বিরোধিতা করবেন। কিন্তু চোখ খুলে দেখলে সব বুঝতে পারবেন।”
আর নামফলকের কবিগুরুর নাম না থাকার বিষয়টিকে তেমন গুরুত্বই দিল না বিশ্বভারতী। এ নিয়ে উপাচার্যের ‘গা ছাড়া’ দাবি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছাড়া তো বিশ্বভারতী আজকের গরিমা লাভই করত না। তিনি তো এখানকার সর্বত্র মিশে রয়েছেন। অর্থাৎ এ থেকেই স্পষ্ট, নিজেদের দিকে ধেয়ে যাওয়া আক্রমণের তির পালটা অভিযোগকরীদের দিকেই ঘুরিয়ে দিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.