Advertisement
Advertisement
শান্তিপুরে অশান্তি

ব্রিজ তৈরির জন্য অধিগ্রহণ হতে পারে মসজিদের জমি, খবর ছড়াতেই তুমুল অশান্তি শান্তিপুরে

ব্যাপক বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকটি বাড়ি, আতঙ্ক এলাকায়।

Violence over alleged bid to acquire mosque land for bridge construction at Shantipur
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:September 12, 2020 6:31 pm
  • Updated:September 12, 2020 6:36 pm  

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, রানাঘাট: জমি দখলে রাখা, ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে অশান্তির জেরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল নদিয়ার শান্তিপুর (Shantipur)। শনিবার সকালে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি, বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহেবডাঙা এলাকায়। মুহুর্মুহু বোমাবাজিতে কেঁপে ওঠে এলাকা। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি বাড়িতে। বিচালি ও পাটের গাদায় ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। ঘণ্টাখানেকেরও বেশি সময় ধরে তাণ্ডবলীলা চালানোর পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স। দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। প্রায় নজিরবিহীন অশান্তির পর এলাকায় বসানো হয় পুলিশ পিকেট। পুলিশের ভয়ে এলাকাছাড়া ওই গ্রামের অনেক পুরুষ। তবে এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

Shantipur-Police

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকায় নিজেদের প্রভাব ধরে রাখাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকার মধ্যপাড়া, উত্তরপাড়া, ও দক্ষিণপাড়ার দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে রেষারেষি রয়েছে। কয়েকমাস আগেও স্থানীয় একটি মাঠের দখল নিয়ে দুষ্কৃতীদের দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি হয়েছিল। ইদানিং শান্তিপুর-কালনা ঘাটের মধ্যে ব্রিজ তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। অধিগ্রহণের ফলে চলে যেতে পারে ওই এলাকায় তিনটি মসজিদের জমি। তা নিয়ে গুঞ্জন ছড়াতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল। জমি অধিগ্রহণের টাকার ভাগ কারা নেবে, তা নিয়েও রেষারেষি আরও চরমে পৌঁছয়। শুক্রবার রাতে বোমাবাজির পর শনিবার সকাল হতে না হতেই শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের ব্যাপক বোমাবাজির লড়াই। মুড়ি-মুড়কির মতো পড়তে থাকে বোমা। বেশ কয়েকটি বাড়িতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

[আরও পড়ুন: ফের আন্দোলন বিশ্বভারতীতে, গবেষণায় সুবিধা প্রদান-সহ একগুচ্ছ দাবিতে সরব এসএফআই]

সকাল থেকে এত বোমাবাজিতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। কোনওরকমে তাঁরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়ে নিজেদের রক্ষা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী, কমব্যাট ফোর্স ও দমকলের একটি ইঞ্জিন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বেশ কয়েকটি শক্তিশালী বোমা, ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামলা খাতুন, আমজাদ মল্লিকদের অভিযোগ, ”এই গন্ডগোলের পিছনে স্থানীয় একজন পঞ্চায়েত সদস্য-সহ শাসকদলের উস্কানি রয়েছে। বোমাবাজির ঘটনায় জড়িত রয়েছে স্থানীয় এক সিভিক ভলান্টিয়ারও। জমি অধিগ্রহণের টাকার ভাগ নিয়ে এই গন্ডগোল হয়েছে।”

[আরও পড়ুন: পাড়ার মধ্যেই বেআইনি মদের ব্যবসা ফেঁদেছেন স্ত্রী, বিরক্ত হয়ে এই কাজই করলেন স্বামী]

যদিও ওই ঘটনায় শাসকদলের জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, ”টাকাপয়সার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে এর আগেও কিছু সমাজবিরোধী ওই এলাকায় গন্ডগোল করেছিল। প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ায় তখনকার মতো শান্ত হয়। আবারও একই বিষয়ে সমাজবিরোধী কিছু লোক ওই এলাকায় অশান্তি করছে। এই ঘটনার পিছনে রাজনীতির কোনও ব্যাপার নেই ।” রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভি এস আর অনন্তনাগ জানিয়েছেন, ”যারা ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের ধরার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।” সবমিলিয়ে, শান্তিপুরের সাহেবডাঙা এলাকা আতঙ্কে থমথমে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement